পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৪ 8 বিভূতি-রচনাবলী বিশ্বাস মশার বললেন—ত বিলক্ষণ ! এখানে আমার এই বাইরের ঘরেই সন্দেআহিকের জায়গা করে দিই। গঙ্গাজল আছে বাড়ীতে। আমরা জেতে কাপালী বটে, কিন্তু আমাদের বাড়ীর মেয়েরা স্নান না করে মুখে জলটুকু দেয় না—সব মাজাঘষা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। ব্রাহ্মণের সনো-আহ্নিক হোলে এ বাড়ীতে, বাড়ী আমার পবিত্র হয়ে যাবে। তারপর একটু জল মুখে দিন— —না না, সে সবে এখন আর দরকার নেই—যখন এখানে আছি, তখন সবই হবে—উঠি এখন—গঙ্গাচরণ খুব ব্যস্ত হয়ে উঠলো ? বিশ্বাস মশার বললেন—আমার গল্পটা শুনে যান। তারপর তো— —আচ্ছা ও আর একদিন শুনবো এখন । সন্দে-আহ্নিকের সময় হয়ে গেলে আমার আর কোনোদিকে মন থাকে না। ব্রাহ্মণের ছেলে, সংস্কৃত পড়িচি–নিত্যকৰ্ম্মগুলো তো ছাড়তে পারবো না— গঙ্গাচরণের কণ্ঠস্বর ভক্তিতে গদগদ হয়ে উঠলো । গঙ্গাচরণের পাঠশালা বেশ জমে উঠেছে। আজ সকালে সাত-আটটি নতুন ছাত্র দড়ি-বাধা মাটির দোয়াত হাতে ঝুলিয়ে এসে উপস্থিত। গঙ্গাচরণ তাদের নিয়ে বেলা দুপুর পর্য্যন্ত ব্যস্ত রইল। ছাত্রদের মধ্যে সকলেই স্থূলবুদ্ধি, এদের বাপ-ঠাকুরদাদা কখনও নিজের নাম লিখতে শেখে নি, জমি চষে কলা বেগুন করে জীবিকানিৰ্ব্বাহ করে এসেচে, লেখাপড় শেখাটা এদের বংশে একেবারে অভিনব পদার্থ। গঙ্গাচরণ বললে, সকাল থেকে চেষ্টা করে কয়েক অঁকুড়ি দিতে শিখলি নে ? তা শিখবি কোথা থেকে ? এখন ওসব আঞ্জুল সোজা হতে ছমাল কেটে যাবে। লাঙলের মুঠি ধরে ধরে আড়ষ্ট হয়ে আছে যে। এই ভূতে, যা একটু তামাক সেজে নিয়ে আয় দিকি ! রান্নাঘরে তোর কাকিমার কাছ থেকে আগুন নিয়ে আয়— দুটি ছাত্র ছুটলো তখুনি আগুন আনতে । গঙ্গাচরণ হেঁকে বললে—এই ! যাবার দরকার কি তোমার –ভুতে একাই পারবে। অন্ত একটি ছেলের দিকে চেয়ে বললে—তোর বাবা বাড়ী আছে ? ছেলেটি বললে—স্থ্য সার—কাল যেন আমায় এসে কামিয়ে যায় বলে দিস্— —সার, বাবা কাল ভিনগারে কামাতে গিয়েচে । —এলে বলে দিস এখানে যেন আসে। অনঙ্গ-বে ডেকে পাঠালে বাড়ীর মধ্যে থেকে। গঙ্গাচরণ গিয়ে বললে—ডাকছিলে কেন ? অনঙ্গ বললে—শুধু ছেলেদের নিয়ে বসে থাকলে চলবে ? কাঠ ফুরিয়েছে তার ব্যবস্থা wtril