পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२९ বিভূতি-রচনাবলী হোল না। বেলা তিনটে বাজে এদিকে । গ্রামের মাতব্বর লোক এক-আধজন এগিয়ে বললে-আজ্ঞে, কি কাজের কথা বলচেন পণ্ডিত মশাই ? —ঈশান কোণে নিমগাছ আছে এ গায়ে ? —আজ্ঞে কোথায় বললেন ? —ঈশান কোণে । তার মাথা চুলকে বললে—আঙ্গে—সে কোথায় ? — ঈশান কোণ জানে। না ? উত্তর-পশ্চিম কোণ–এই দিক— আঙুল দিয়ে গঙ্গাচরণ ঈশান কোণ দেখিয়ে দেয়। গ্রামে ঢুকবার পথই সেদিক দিয়ে, আসবার সময় সেদিকে একটা বড় নিমগাছ সে লক্ষ্য করে এসেচে আজই সকাল বেলা । একজন বললে—আজ্ঞে হ্যা, আছে বটে একটা । —আছে ? থাকতেই হবে । ঈশানে যোগিনী যে— —আজ্ঞে, কি করতে হবে ? —ওখানে ধ্বজা বাধতে হবে। চলে আমার সঙ্গে— দুজন জোয়ান ছোকর গঙ্গাচরণের আদেশে নিমগাছের মগঙালে ধ্বজ বাধতে উঠলো । বেলা চারটে বাজে। গঙ্গাচরণ ইপি ফেলে নিশ্চিন্ত হবার ভঙ্গিতে বললে—যাক, এবার ব্যাপারটা মিটে গেল। বাবা, পয়সা খরচ করে ক্রিয়াকর্মের অনুষ্ঠান করলে তোমরা, এর মধ্যে খুঁত থাকতে দেবো কেন ? এবার তোমরাও নিশ্চিন্দি, আমিও নিশ্চিন্দি। গা বন্ধ বললেই গা বন্ধ হয় ! খাটুনি আছে। সকলে শ্রদ্ধা ও ভক্তিতে আপ্নত হয়ে উঠলো। এমন না হোলে পণ্ডিত ? গ্রামের সবাই মিলে অনুরোধ করে এক গোয়ালা বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে গঙ্গাচরণের জলযোগের ব্যবস্থা করলে । গঙ্গাচরণ বললে—ডাবের জল ছাড়া আমি অন্ত জল খাবে না। তোমরাও নদীর জল ব্যবহার বন্ধ কর একেবারে এক মাসকাল নদীর জল কেউ খেতে পাবে না। বাসি বা পচা জিনিস খাবে না। মাছি বসলে সে খাবার তখুনি ফেলে দেবে। মনে থাকবে ? সবাইকে বলে দাও— মাতব্বর লোকের সকলকে কথাটা বলে বুঝিয়ে দিলে। সন্ধ্যার আগে গরুর গাড়ী করে ফিরচে, পথে গ্রাম্য পুরোহিত দীয় ভটচাখ এসে বললে— নমস্কার, চললেন— --व्यां८छ3 ई! । —আমার একটা কথা আছে, গাড়ী থেকে নেমে একটু শুকুন— গঙ্গাচরণ গাড়ী থেকে নেমে একটা গাছতলায় দাড়িয়ে দীক্ষ ভটচাযের সঙ্গে কথা বললে। দীয় ওর হাত দুটি ধরে বললে—আমার একটা অনুরোধ—