পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৬ বিভূতি-রচনাবলী গঙ্গাচরণের মনে পড়লে বৃদ্ধ কুণ্ডু মশায়ের কথা। এই গত বৈশাখ মাসেও, কুণ্ডু মশায়ের দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্চে সে, কুণ্ডু মশাই তাকে ডেকে আদর করে তামাক সেজে থাইয়ে বলেচে–পণ্ডিত মশাই, আমার দোকান থেকে চাল নেবেন, ভাল চাল আনিয়েচি। কত খাতির করেচে। কুণ্ডু মশায়ের দোকানে গেলে ফিরতে হবে না, ঠিক পাওয়া যাবেই। কিন্তু সেখানেও তথৈবচ, গঙ্গাচরণ দোকান ঘরটিতে ঢুকবার সময়ে চেয়ে দেখলে বা পাশের যে বাশের মাচায় চালের বস্তা ছাদ পৰ্য্যন্ত সাজানো থাকে, সে জায়গা একদম খালি, হাওয়া খেলচে । বৃদ্ধ কুণ্ডু মশায় প্রণাম করে বললে—আমুন, কি মনে করে ? অভ্যর্থনার মধ্যে বৈশাখ মাসের আস্তরিকতা নেই যেন। প্রণামটা নিতান্ত দায়সার 6%ों८छ्न्न ! গঙ্গাচরণ বললে—কিছু চাল দিতে হবে। —কোথায় পাবো, নেই। —এক টাকার চাল, বেশি নয়। এই লোকটাকে উপোস করে থাকতে হবে । দিতেই হবে আপনাকে । কুণ্ডু মশায় স্বর নিচু করে বললে—সন্ধের পর আমাব বাড়ীতে যেতে বলবেন, খাবার চাল থেকে এক টাকার চাল দিয়ে দেবো এখন। গঙ্গাচরণ বললে—ধান চাল কোথায় গেল? আপনার এত বড় দোকানের মাচা একদম ফাক কেন ? —কি করবো বাপু, সেদিন পাচু কুণ্ডুর দোকান লুঠ হবার পর কি করে সাহস করে মাল রাখি এখানে বলুন। সবারই সে দশা। তার ওপর শুনচি পুলিসে নিয়ে যাবে চাল কম দামে মিলিটারির জন্তে । —কে বললে ? —বলচে সবাই। গুজব উঠেচে বাজারে । আপনার কাছে মিথ্যে বলবো না, চাল আমি বাড়ী নিয়ে গিয়ে রেখে দিইচি। কিন্তু লোকের কাছে কবুল যাবে না, আপনাকে তাই বললাম, অন্তকে কি বলি ? —আমরা না খেয়ে মরবো ? —যদিন থাকবে, দেবো। তবে আমার জামাই গরুর গাড়ী করে বন্দিবাটির হাটে কিছু চাল নিয়ে যেতে চাইচে। তাই ভাবচি । —পাঠাবেন না, লুঠ হবে পথে। বুঝে কাজ করুন, কিছু চাল দেশে থাকুক, নইলে দুর্ভিক্ষ হবে যে। কি খেয়ে বাঁচবে মানুষ ? —বুঝি সব, কিন্তু আমি এক রাখলি তো হবে না। খা বাবুরা এত বড় আড়তদার, সব•ধান বেচে দিয়েচে গবর্ণমেণ্টের কনট্রাকৃটারদের কাছে। একদানা ধান রাখে নি। এই রকম অনেকেই করেচে খবর নিয়ে দেখুন। আমি তো চুনোপুটি দোকানদার, পঞ্চাশ-বাট