পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত २8¢ গঙ্গাচরণ পাঠশালায় বেরিয়ে গেলে হরি কপিালীর ছোট বেী এসে ছেচঙলায় দাড়িয়ে চুপি চুপি বললে—উনি চলে গিয়েচেন ? —হঁ্যা, দিদি। যাই— —চলে বামুন-বোঁ, ওরা সব বসে আছে তোমার জন্ত । —কত ধান আজকে ? –পাচ আস্তৃিতিন কাঠা। চিড়ে আছে তিন কাঠা। —আমাকে ধান এলে দেওয়া শিখিয়ে দিবি দিদি ? —সে তোমার কাজ নয়। অমন চাপাফুলের কলির মত আঙুল, টেকি পড়ে ছেচে যাবে। তার দায়িক আমি হবে বুঝি বামুন-বো ? —দায়িক হতে হবে না সে জষ্ঠি। আহা, ভঙ্গি দেখো না ! মরণের ভগ্নদশা | কাপালী-বেী অনঙ্গ-বৌয়ের দিকে চোখ মিটকি মারছিল, তার-প্রতি লক্ষ্য করেই অনঙ্গবৌয়ের শেষের উক্তিটুকু। হরি কাপালীর ছোট বৌয়ের বয়েস অনঙ্গ অপেক্ষ বছর দুই বেশি হবে, ছেলেপূলে হয় নি, রংও ফসর্ণ, মুখ-চোখের চটক ও দেহের গড়ন এবং বাধুনি ভালোই। রাস্তার লোকে চেয়ে দেখে । অনঙ্গ হেসে বললে—আড়চোখ দেখাগে অন্য জায়গায়—বহুলোকের মুণ্ড ঘুরিয়ে দিতে পারবি। কাপালী-বোঁ হেসে গড়িয়ে পড়ে আর কি। বললে—মুণ্ড ঘুরিয়ে বেড়ানো বুৰি আমার কাজ ? —কি জানি দিদি ? —আর তুমি বামুন-বেী—তুমি যে অনেক মুনির মন টলিয়ে দিতে পারে মন করলি ? আমরা তো তোমার পায়ের নখের যুগ্য নই। সামনে খোশামোদ করে বলচি নে বামুন-বোঁ । গ্রামের সবাই বলে— অনঙ্গ-বে। সলজ্জ হাসি মুখে বললে—ষা:– হরি কাপালীর দু’খানা মেটে ঘর, একদিকে পুই মাচা, এক দিকে বেড়ার মধ্যে লালডাটা ঝিঙে ও বেগুনের চাষ । পুই মাচার , শে ছোট চালার নিচে টেকি পাতা । সেখানে জড়ো হয়েচে হরি কাপালীর বড়-বে, আরও পাড়ার দু-তিনটি কি-বে। টেকিঘরের চার পাশে বর্ষীপুষ্ট বনকচুর ঝাড়, ধুতরে গাছ, আদাড় বাগ গাছে রাঙা রাঙা মটর ফল, টেকিঘরের চালে তেলাকুচে লতা উঠে দুলচে, বর্ষাসজল হাওয়ায় কচি লতাপাতার গন্ধ। অনঙ্গ-বেী আর ছোট-বোঁ, সেখানে পৌছুতে সবাই খুব খুশি। - বড়বে বললে—এসো বামুন-ৰৌ, তুমি না এলি টেকশেলের মজলিশ আমাদের জমে না— xم ক্ষিত্তী কাপালী বললে—যা বললে দিদি ঠাকুল দি আমাদের টেকশেল আলো