পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૮:૨ বিভূতি-রচনাবলী আরও মাইলথানেক এগিয়ে গেল গঙ্গাচরণ। খলসেখালির সনাতন ঘোষ নিজের ঘরের দাওয়ায় বসে তামাক খাচ্চে, ওকে দেখে বললে—পণ্ডিত মশাই, ওতে কি ? চাল নাকি ? --ईश ! —কোথায় পেলেন ? —সে যা কষ্ট ত আর বোলো না । এক বুড়ীর কাছ থেকে সামান্ত কিছু আদায় করেচি, তাও আগুন দর। —কই দেখি দেখি ? সনাতন ঘোষ নেমে এসে ওর হাতের পুটুলিট নিজের হাতে নিয়ে পুটুলি নিজেই খুলে চাল দেখতে লাগলো। ওর মুখটা যেন কেমন হয়ে গেল। চালের দানা পরীক্ষা করতে করতে বললে—বডড মোটা । কত দর নিলে । একটা কথা বলবো পণ্ডিত মশাই ? কি ? —দাম আমি যা হয় দিচ্চি। আমার অৰ্দ্ধেকট চাল দিয়ে যান। দিতেই হবে। দু'দিন না খেয়ে আছে সবাই। মেয়েকে শ্বশুরবাড়ীর থেকে এনে এখন মহা মুশকিল, সে বেচারীর পেটে আজ দুদিন লক্ষ্মীর দানা যায় নি—কত চেষ্টা করেও চাল পাই নি— সনাতন ঘোষের অবস্থা খারাপ নয়, বাড়ীতে অনেকগুলো গরু, দুধ থেকে ছানা কাটিয়ে নরহরিপুরের ময়রাদের দোকানে যোগান দেয়—এই তার ব্যবসা। গঙ্গাচরণ ইতিপূর্বে সনাতনের বাড়ী থেকে দু-এক খুলি টাটকা ছানা নিয়েও নিয়েচে । তার আজ এই দশা! কিন্তু চাল মাত্র সে নিয়েচে তিন কাঠা । আর কোথাও চাল পাওয়া যাচ্চে না । এ চাল দিলে তার স্ত্রী-পুত্র অনাহারে থাকবে দু'দিন পরে। চাল দেওয়ার ইচ্ছে তার মোটেই নেই— এদিকে সনাতন মোক্ষম ধরেচে চালের পুটুলি, তার হাত থেকে চাল নিতান্তই ছিনিয়ে নিতে হয় তাহলে । কিংবা ঝগড়া করতে হয়। y’ সনাতন ততক্ষণে কাকে ভেকে বললে—ওরে একটা ধাম নিয়ে আয় তো বাড়ীর মধ্যে থেকে ? একটা কাঠাও নিয়ে আয়— সনাতন নিজের হাতে এক কাঠা চলি যখন মেপে ঢেলে নিয়েচে, তখন গঙ্গাচরণ মিনতিসুচক ভদ্রতার মুরে বললে—আর না সনাতন, আর নিও না— -श्रांब्र वांश्च कiट्टे —না বাপু, আমি আর দিতে পারবে না। বাড়ীতে চাল বাড়ন্ত—বুঝলে না ? সনাতনের নাতিটি বললে—দাদামশাই, ওঁর চাল আর নিও না, দিয়ে দাও। সনাতন মুখ থিচিয়ে বলে উঠলো—তোদের জন্তি বাপু খেটে মরি, নিজের জন্তি কিসের ভাবন। একটা পেট যে করে হোক চলে যাবেই। রইল পড়ে চাল, যা বুঝিস করগে যা। রাগ না লক্ষ্মী। গঙ্গাচরণ বিনা চক্ষুলজ্জায় সমস্ত চাল উঠিয়ে নিয়ে চলে এল। বাড়ী এসে দেখলে অনঙ্গে ভাত চড়িয়ে ওল কুটতে বসেচে রান্নাঘরের দাওয়ায়। স্বামীকে দেখে বললে—ওগো শোনো, আমি এক কাজ করিচি। সেদিন সেই বোষ্টম প্রভাতী মুরে গান