পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭ોઝ বিভূতি-রচনাবলী বাজারে এমন নির্তাবনায় আহার জুটবে কোথা থেকে ? সেদিন মতি দুপুরে এসে হাজির। ওর পরনে শতচ্ছিন্ন কাপড়, মাথায় তেল নেই। অনঙ্গ-বেী ওকে বললে—মতি তেল দিচ্চি, একটা ডুব দিয়ে আয় দিকি ! —পেট জলচে বামুন-দিদি। কাল ভাত জোটে নি, নেয়ে এলেই পেটে আগুন জলে উঠবে। —তুই যা, সে ভাবনা তোকে ভাবতে হবে না। মতি মুচিনী নিৰ্ব্বোধ মেয়ে নয়, সে চুপ করে থেকে বললে—না, তোমাদের এখানে আর থাবো না | —কেন রে ? —তুমি পাবে কোথায় বামুন-দিদি যে রোজ রোজ দেবে ? —সে ভাবনা তোর নয়, আমার। তুই যা দিকি, নেয়ে আয়— মতি মুচিনী স্নান সেরে এল। একটা কলার পাতে আাধপোয়াটাক কলাইসিদ্ধ ও কিসের চচ্চড়ি। অনঙ্গ-বেী ধরা গলায় বললে—ওই খামতি । মতি অবাক হয়ে একদৃষ্ট্রে ওর দিকে চেয়ে বললে—তোমাদেরও এই শুরু হোস্নেচে ? —তা হয়েচে । —চাল পেলে না ? —পঞ্চান্ন টাকা মণ। দাম দিলে এখুনি মেলে হয়তো । —কিন্তু এ তোমরা খেয়ে না বামুন-দিদি ! —কেন রে ? —একি তোমাদের পেটে সহি হয় ? আমাদের তাই সহি হয় না। —তুই থা থা—এত বক্তিমে দিতে হবে না তোকে । বিকেলে মতি এসে বললে—বামুন-দিদি, এক জায়গায় মেটে আলু আর বুনো শোলা কচু হয়েচে জঙ্গলের মধ্যে। একটা সাবলটাবল ছাও, কেউ এখনো টের পায় নি, তুলে আনি। অনঙ্গ-বে বললে—তুই একলা পারবি আলু তুলতে ? —কেন পারবে না ? দ্যাও একখানা শাবল— —খাস নি, দুৰ্ব্বল শরীর, ভিরমি লেগে পড়ে যাবি। তুই আর আমি যাই— এই সময় কাপালীদের ছোট-বেী এসে জুটলো। বললে—কি পরামর্শ হচ্চে তোমাদের গা ? অতএব ছোট-বোঁকেও ওদের সঙ্গে নিতে হোল । গ্রামের উত্তর মাঠের নিচেই সবাইপুরের বাওড। বাওড়ের ধারে খুব জঙ্গল। জঙ্গলের মধ্যে একটা শিমুলগাছ মাথা তুলে দাড়িয়ে আছে। ধাড়াগাছের দুর্তেস্ক ঝোপের মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকতে হয়। ওরা এগিয়ে গিয়েচে অনেকখানি। কিন্তু অনঙ্গ-বে। আর কাপড় ছাড়াতে পারে না। কি বিক্র কাটা ।