পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত ২৭৩ অনঙ্গ-বেী হেসে বললে—আমার হাতের একগাছা কুলি আছে, তাই বেচে চাল নিয়ে এসো | তিনদিন কেটে গেল । চাল তো দুরের কথা কোন খাবারই মেলে না। কলাইয়ের মণ ষোল টাকা, তাও পাওয়া দুষ্কর। কাপালী-বোঁ না খেয়ে রোগ হয়ে গিয়েচে, তার চেহারার আগের জলুস আর নেই। সন্ধ্যাবেল পা টিপে টিপে অনঙ্গ-বেীরের কাছে এসে বললে—কি করচে বামুন-দিদি ? —বসে আছি ভাই, রান্না-বান্না তো নেই । —সে তো কারো নেই! —কি খেয়েছিস ? সত্যি বলবি ? কাপালী-বোঁ চুপ করে রইল। অনঙ্গ-বে। ঘরের মধ্যে গিয়ে এদিক-ওদিক খুজলো। কিছুই পেলে না। তার ধারণ ছিল কাল রাত্রের আধখানা নারকেল বোধ হয় ঘরের কোথাও আছে, কিন্তু খিদের জালায় ছেলেরা বোধ হয় কখন শেষ করে দিয়েচে, সে দেখেনি। কাপালী-বেী ওর দিকে চেয়ে রইল অদ্ভুত দৃষ্টিতে। ওকে দেখে কষ্ট হয়। একটু কাছে ঘেঁষে এসে বললে—আজ যাবো। অনঙ্গ-বেী বিস্ময়-সুরে বললে—কোথায় যাবি ? —ইটখোলায় ? —কোন ইটখোলায় ? —দীঘির পারের বড় ইটখোলায়—জানো না ? আহা ! কাপালী-বে যেন ব্যঙ্গের সুরে , থা শেষ করলে। অনঙ্গ-বেী বললে—সেখানে কেন যাবি রে ? কাপালী-বোঁ চুপ করে রইল নিচু-চোখে । অনঙ্গ-বে বললে—ছুটকি! —বলে গে তুমি বামুন-দিদি। তোমার মুখের দিকে চেয়ে আমি এতদিন জবাব দিই নি। আর পারি নে না খেয়ে—না খেয়েই যদি মলাম, তবে কিসের কি ? আমি কোনো কথা শুনবো না—চলি বামুনদি, পাপ হয়ে নরকে পচে মরবো সেও ভালো— অনঙ্গ কোনো কথা বলবার আগে কাপালী-বেী ততক্ষণ হন হন করে চলেচে বেড়ার বাইয়ের পথে । অনঙ্গ-বে। পিছনে ডাক দিলে—ও বৌ শুনে যা, যাস নি,—শোন ও বেী— পুরোনো ইটখোলার এদিকে একটা বড় শিমূল গাছের তলার অন্ধকারে কে একজন দাড়িয়ে। কাপালী-বোঁ আনাড়ির মত অন্ধকারে হোচট খেয়ে পথ চলে সেখানে পৌছুলো । שנ-4 .ft. H