পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত ՀՊs কেটে কাপড় কুঁচিয়ে হাতে দিলে। রান্নার জন্তে কুটনো বাটন সব ঠিক করে এনে দিলে । একবার হেসে বললে—দাদাঠাকুর, অতটা মুন ? পুড়ে যাবে যে বেন্নন। —দেবো না ? --বেয়ন মুখে দিতে পারবেন না। আপনার রমুই করবার অভোস নেই বুঝি ? * -नां । —আপনি বসে বসে রাধুন, আমি দেখিয়ে দিচ্চি। ক্ষ্যাস্তমণি যে বেশ ভাল মেয়ে, গঙ্গাচরণ অল্প সময়ের মধ্যেই তা বুঝতে পারলে। কোথা থেকে একটু আখের গুড় গাওয়া ঘি যোগাড় করে নিয়ে আসে। যাতে গঙ্গাচরণের খাওয়াটা ভাল হয়, সেদিকে খুব লক্ষ্য। খেতে বসে গঙ্গাচরণের কিন্তু ভাত যেন গলা দিয়ে নামে না— আশ্চর্য্যের কথা, হাবুর জন্তে দুঃখ নয়, পটলার জন্তেও নয়—দুঃখ হোল অনঙ্গ-বেীরের জন্তে । সে আজ দুদিন খায় নি। তার চেয়ে হয়তো আরও বেশি দিন খায় নি। মুখ ফুটে তো কোনো দিন কিছু বলে না । —আর একটু আখের গুড় দি ? —না। এ দুধ তো থাটি, গুড় দিলে সোয়াদ নষ্ট হয়ে যাবে। এমন ঘন দুধের বাটিতে হাত ডুবিয়ে সে খাচ্চে এখানে, ওখানে অনঙ্গ-বেী হয়তো উঠোনের কাটানটের শাকের বনে চুবড়ি নিয়ে ঘুরচে, অথান্ত কাটানটে শাক তুলবার জন্তে । নইলে বেলা হোতে না হোতে পাড়ার ছেলেমেয়েরা এসে জুটবে। তাদের উৎপাতে গাছের পাতাটি থাকবার জো নেই। ক্ষ্যান্তমণি পান আনতে শেল। পাতে দুটি ভাত পড়ে আছে—গঙ্গাচরণের প্রবল লোভ হোল ভাত দুটি সে বাড়ী নিয়ে যায়। কিন্তু কি করে নিয়ে যাবে ? চাদরের মুড়োয় বেঁধে ? ছিঃ—সবাই টের পাবে। এটো ভাত ব্রাহ্মণ হয়ে চাদরের মুড়োয় বেঁধে নেবে ? গঙ্গাচরণ বসে বসে মতলব ভজিতে লাগলো। কি করা যাবে ? বলা যাবে কি এই ধরনের যে, আমাদের বাড়ি একটা কুকুর আছে তার জন্যে ভাত কটা নিয়ে যাবো । তাতে কে কি মনে করবে ? বড় লজ্জা করে যে। অনেকগুলো ভাত নয় বটে, তবুও চার-পাচ গ্রাস হবে অনঙ্গ-বৌয়ের। বড় বড় চার-পাচ গ্রাস। নিয়ে যাবেই সে। কিসের লজ্জা ? এমন সময়ে ক্ষ্যাস্তমণি এস পান দিতেই ওর মুখের দিকে চেয়ে গঙ্গাচরণের সাহস চলে গিয়ে রাজ্যের লজ্জা ও সঙ্কোচ এসে জুটলো। দিব্যি সুন্দরী মেয়ে, যৌবন-পুষ্ট দেহটির দিকে বার বার চেয়ে দেখেও আশ মেটে না। কালো চুল মাথার একতাল, নাকের ডগায় একটা ছোট্ট তিল। মুখে দু-দশটা বসন্তের দাগ আছে বটে, তবুও ক্ষান্তমণির. श्रृंबै भूक्ष । - গঙ্গাচরণ বললে—ক্ষ্যস্ত, তোমার বসন্ত হয়েছিল ? —হঁ্যা দাদাঠাকুর। আজ তিন বছর আগে । —ডাবের জল দিয়ে মুখ ধুলে ও দাগ কটা আর থাকতো না।