পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रैb^० বিভূতি-রচনাবলী —আপনিও যেমন দাদাঠাকুর। আর কি হবে মুখের চেহারা নিয়ে বলুন। সে দিন চলে গিয়েচে, কপাল যেদিন পুড়েচে, হাতের নোয়া ঘুচেছে। এখন আশীৰ্ব্বাদ করুন, যেন ভালোর ভালোয় যেতে পারি। তারপর চুপি চুপি বললে—আপনি ওই পুকুরের বঁাশঝাডের ধারে দাড়িয়ে থাকুন গিয়ে। গঙ্গাচরণ সবিস্ময়ে বললে—কেন ? —চুপ চুপ। বাবাকে লুকিয়ে ছুটে চাল দিচ্চি আপনাকে । কাউকে বলবেন না। আধ পালিটীক চাল আমি আলাদা করে বেখে দিইচি আপনার রান্নার চাল আনবার সময় । নিয়ে যান চাল কটা। আপনার মন খাবাপ হয়েচে বাড়ীর জন্তি, আমি তা বুঝতে পেরেচি। মেয়েরাই লক্ষ্মী। মেয়েরাই অন্নপূর্ণ। বুভূক্ষু জীবের অন্ন ওরাই দুহাতে বিলোয়। ক্ষ্যান্তমণিকে আঁচলের মুডোতে লুকিয়ে চাল আনতে দেখে দূর থেকে গঙ্গাচরণের ওই কথাই মনে হোল। ক্ষান্ত গঙ্গাচরণের পায়ের ধুলো নিয়ে বললে—হাতে করে দুটাে চাল দেবে ব্রাহ্মণকে, এ কত ভাগ্যি! কিন্তু বাবাঠাকুর, যে আকাল পডেচে, তাতে কাউকে কিছু দেবার জো নেই। সবই আদেষ্ট। লুকিয়ে নিয়ে যান— —লুকিয়েই নিয়ে যাচ্ছি— —না লুকিয়ে নিষে গেলি নোকে চেয়ে নেবে। না দিলি কান্নাকাটি করবে, এমন মুশকিল হয়েচে। . আমাদের গায়ে তো দোর বন্ধ না করে দুপুরে খেতে বসবার জো নেই। সবাই এসে বলবে, ভাত দ্যাও। দেখে দুঃখুও হয়—কিন্তু কতজনকে ভাত দেবেন আপনি ? খ্যামত যখন নেই, তখন দোর বন্ধ করে থাকাই ভালো। একটা কথা বলি— —কি ? —যদি কখনো এমন হয়, না খেয়ে থাকতি হয়, তবে আমার কাছে আসবেন, আমি যা পারি দেবো। আমার নিজের সোয়ামী পুত্তর-নেই, দেবতা ব্রাহ্মণের সেবাও যদি না করলাম, তবে জীবনে করলাম কি বলুন ! বাড়ী ফিরবার পথে নসরাপুরের বিলের ধারে একটা দোকান। বেলা পড়ে এসেছে। দোকানীকে তামাক খেতে দেখে গঙ্গাচরণ দোকানে গিয়ে উঠে বললে—তামাক খাওয়াও দিকি একবার— দোকানী বললে—আপনার ? —ব্রাহ্মণ । —পেরণম হই । --জয়ন্তু । দোকানী উঠে গিয়ে একটা কলার পাতা নিয়ে এসে ঠোঙা করে কন্ধে বসিয়ে গঙ্গাচরণের হাতে দিলে—বললে—আপনার নিবাস ? -नडून পাড়া, চর পোলত ।