পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శిసెe বিভূতি-রচনাবলী কি মতলব ফাদা যায় ? বলা যাবে কি ও বাপের বাড়ী গিয়েছে ? কিংবা ওর বডড অমুখ ? উছ, তাহোলে ও আপদটা সেখানে দেখতে যেতে পারে। গঙ্গাচরণ আকাশপাতাল ভেবে কিছুই পেলে না। ছুটির সময় এল। পাঠশালার ছুটি দিয়ে গঙ্গাচরণ যেমন বাড়ীর দিকে চলবে, ও অমনি চলবে গঙ্গাচরণের সঙ্গে। সোজাসুজি কথা বললে কেমন হয় ? না মশাই, এবার আর সুবিধে হবে না আমার ওখানে। বাড়ীতে অসুখ, তার ওপর চালের টানাটানি । কিন্তু পরবর্তী সংবাদের জষ্ঠে গঙ্গাচরণ প্রস্তুত ছিল না । বেলা যত যায় দুর্গ ভট চাষ মাঝে মাঝে পাঠশালা থেকে নামে আর রাস্তার ওপর গিয়ে দাড়িয়ে সেখহাটি-মণিরামপুরের বিলের দিকে চেয়ে চেয়ে কি যেন দেখে। দুতিনবার এ রকম করবার পরে গঙ্গাচরণ কৌতুহলের মুরে বললে—কি দেখচেন ? —এত দেরি হচ্চে কেন, তাই দেখচি । —কাদের দেরি হচ্চে ? কারা ? —ওই যে বললাম। বাড়ীর সবাই আসচে কিনা। আমার স্ত্রী, মেয়েট, আর দুটি ছেলে। সব না খেয়ে আছে যে। আর কোনো উপায় তো দ্যাখলাম না । বলি, চলো আমার অন্নপুন্নো মার কাছে। না থেয়ে ষোল-সতেরো বছরের মেয়েটা বডড কাতর হয়ে পড়েচে । দিশেহারা মত হয়ে গিয়েছে মশাই। তা আমি দুটাে কলাইসেন্ধ খেলাম মণিরামপুরের নিধু চকত্তির বাড়ী এসে। তাদেরও সেই অবস্থা। গোয়ালার বামুন, এ দুদিনে কোনো কাজকৰ্ম্ম নেই, পায় কোথায় বলুন। চাল একদান নেই তাদের ঘরে। নিধু চকত্তির বুড়ো মা বুঝি জরে ভূগছে আজ দু মাস। ওই ঘুষযুষে জর। তারই জন্যে দুটাে পুরনো চাল যোগাড় করা আছে। তিনি খান। ওরা খেতে বসেচে সিদ্ধকলাই। সব সমান অবস্থা । আমি বলি আমি এগিয়ে গিয়ে বসি পণ্ডিত মশায়ের পাঠশালায়, তোমরা এসে । সৰ্ব্বনাশের মাথায় পা ! দুর্গ ভট চাষ গুষ্টিসমেত এ দুর্দিনে তারই বাড়ী এসে জুটচে তা হোলে! মতলব করেচে দেখচি ভালোই। এখন উপায় ? সোজাসুজি বলাই ভালো। না কি ? এমন সময়ে রাস্তা থেকে বালিকা-কণ্ঠে শোনা গেল—ও বাবা—কে রে ময়না ? বলেই দুর্গ পণ্ডিত বাইরে চলে গেল। গঙ্গাচরণ বাইরের দিকে চেয়ে দেখলে একটি ষোল-সতেরো বছরের মেয়ে পাঠশালায় সামনে পথের ওপর দাড়িয়ে আছে। মেয়েটিকে নিয়ে অল্প একটু পরেই দুর্গ পণ্ডিত পাঠশালার ঢুকে বললে—এই আমার মেয়ে ময়না, ভালো নাম হৈমৱতী। প্রণাম করে মা— কি বিষম মুশকিল। হৈমবতী এগিয়ে এসে প্রণাম করলে সল ভাবে। বেশ সুন্দরী মেয়ে। ওই রোগ পটকা,