পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যদু হাজরা ও শিখিধ্বজ আপনারা একালে যজু হাজরার নাম বোধ হয় অনেকেই শোনেন নি। আমাদের বাল্যকালে কিন্তু যদু হাজরাকে কে না জানত ? চব্বিশ-পরগণা থেকে মুরশিদাবাদ এবং ওদিকে বৰ্দ্ধমান থেকে খুলনার মধ্যে যেখানেই বাজারে বা গঞ্জে বড় বারোয়ারীর আসরে যাত্ৰ হ’ত সে সব স্থানে দশ বার ক্রোশ পৰ্য্যস্ত যদু হাজরার নাম লোকের মুখে মুখে বেড়াত। কাঠের পুতুল চোখ মেলে চাইত—যদু হাজরার নাম শুনলে। আপনার কেউ কি যদু হাজরাকে নল দময়ন্তী’ পালাতে নলে-র পাট করতে দেখেন নি ? তা হলে জীবনের বহু ভালো জিনিসের মধ্যে একটা সের্ভালো জিনিস হারিয়েছেন। আমি দেখেছি । সে একটা অদ্ভুত দিন আমার বাল্য জীবনে। তখন আমার বয়স হবে বার কি তের। আমাদের গ্রামের একটি নববিবাহিতা বধূর বাপের বাড়ীতে কি একটা কাজ উপলক্ষে, নব বধুটিকে নেীকো করে তার বাড়ীতে আমাকেই রেখে আসতে হবে ঠিক হ'ল। পৌষ মাস। খুব শীত পড়েছে। বধূট গ্রাম-সম্পর্কে আমার গুরুজন, আমার চেয়ে তিন চার বছরের বড়ও বটে। দুজনে গল্পগুজবে সারাপথ কাটালুম। তার বাপের বাড়ী পৌছে আমি কিন্তু পড়লুম একটু মুশকিলে। মন্ত বড় বাড়ী ; উৎসব উপলক্ষে অনেক জায়গা থেকে আত্মীয়-কুটুম্বের দল এসেছে, তার মধ্যে দুটি শহর অঞ্চলের চালাক চতুর জ্যাঠা, ছেলে আমার বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠল। আরও এত ছেলে থাকতে তারা অামাকেই অপ্রতিভ কোরে কেন যে এত আমোদ পেতে লাগল, তা আমি আজও ঠিক বুঝতে পারি না। একটি ছেলের বয়স বছর পনের হবে। রং ফর্সা, ছিপছিপে, সিস্কের পাঞ্জাবি গায়ে— নাম ছিল যতীন, নামটা এখনও মনে আছে—সে আমাকে বললে—কি পড় ? আমি বললাম-মাইনর সেকেণ্ড ক্লাসে পড়ি । সে বললে—বলত হাচি মাইনাস কালি কত ? প্রশ্ন শুনে আমি অবাক। বাঙ্গালা স্কুলে পড়ি, "মাইনাস" কথার মানে তখন জানিনে। তাছাড়া একি অদ্ভূত প্রশ্ন ! আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে সে অমনি আবার জিজ্ঞাসা করল—“হবগবলিন" মানে কি ? আমি ইংরাজী পড়ি বটে কিন্তু সে সুশীল ও মুবোধ আবদুলের গল্প, দারোয়ান ও জেলের গল্প, বড় জোর গুটিপোকা ও রেশমের কথা। সে সবের মধ্যে ঐ অদ্ভূত কথাটা নেই। লজ্জার লাল হয়ে বললুম—পারব না। - কিন্তু ভাতেও আমার রেহাই নেই। ভগবান সেদিন লোক-সমাজে আমাকে নিতান্ত হের প্রমাণিত করতেই বোধ হয় যতীনকে ঔদের বাড়ীতে হাজির করেছিলেন। সে দু'হাতের আঙ্গুলগুলো প্রসারিত করে আমার সামনে দেখিয়ে বললে—এতগুলো কলা যদি এক পয়সা ه ۹ -اس-هه ۹۰ f