পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\లి)\! বিভূতি-রচনাবলী বিশ্বনাথবাবুর জন্মদিনের সপ্তাহ দুই পরেই আমি স্বগ্রামে গেলুম। বলা আবশুক যে, আমার গ্রামের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব বেশি নয়, সেখানে বছরে একবার যাওয়াও ঘটে কি-না সন্দেহ । বাড়ী গিয়ে শুনলুম গ্রামের বৃদ্ধ শশী-ঠাকরুণ মারা গিয়েছেন। শশী-ঠাকরুণের বয়স সে কত হয়েছিল, তা বলা শক্ত। কেউ বলে নব্বই, কেউ বলে একশোর কাছাকাছি হবে। আমরা মোটের উপর তাকে আমাদের বাল্যকাল থেকেই অতি-বৃদ্ধাই দেখে আসছি। বয়সের যে গণ্ডী পার হয়ে গেলে মানুষের আকৃতির পরিবর্তন আর চেনবার উপায় থাকে না, শশীঠাকরুণ আমাদের বাল্যেই সে গওঁী পার হয়েছিলেন। শশী-ঠাকরুণের চার ছেলে, তিন মেয়ে। বড় ছেলেটি ছাড আর সকলেই বিদেশে চাকরি করে-বড ছেলে তেমন লেখাপড়া না জানার দরুণ দেশ থেকে সামান্ত কি কাজকৰ্ম্ম করে, তার অবস্থাও ভালো নয়, অনেকগুলো ছেলেমেয়ে নিয়ে বড় কষ্ট পায়। ভায়েরা পৃথক, কেউ কাকে সাহায্য করে না । কৰ্ম্মস্থান থেকে দেশেও কেউ আসে না । শশী-ঠাকরুণের কষ্টের অবধি ছিল না। একটা চালা-ঘরে ইদানীং তিনি পড়ে থাকতেন —বড় ছেলেই তার ভরণ-পোষণ করতে বটে, কিন্তু তেমন আগ্রহ ক'রে করতে না । অর্থাৎ তার মনের মধ্যে এ ভাবটা জেগে রইতে যে, মা তো আমার একার নয়—সকলেরই তো কিছু কিছু সাহায্য করা উচিত মাকে—তারা যদি না করে আমিই বা কেন এত দায় ঘাড়ে করতে शांझे ? শশী-ঠাকরুণের অন্ত ছেলেরা কখনো সন্ধান নিত ন!—বুজী বাচল, কি মোলো । অথচ তাদের সকলেরই অবস্থা ভালো-মাষ্টনে কেউই মন্দ পায় না, শহরে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে থাকে। বড় ভাইয়ের পত্রের জবাব দিত—তাদের নিজেদেরই অচল হয়েছে, শহরের খরচ থেকে বঁচিয়ে বাড়ীতে কি ক’রে পাঠায় । বাড়ীতে বিষয়-সম্পত্তি তো রয়েছে—তার অায় থেকে তো মায়ের চলা উচিত—ইত্যাদি । কিন্তু বিষয়-সম্পত্তি এমন কিছুই না যার আয় থেকে বেকার বড় ছেলের একপাল পোস্থ্য ও শশী-ঠাকরুণের ভরণ-পোষণ ভালো ভাবে চলে । বুড়া খেতেই পেত না। ইদানীং আবার তার ছেলেমানুষের মতো লোভ দেখা দিয়েছিল —বিশেষ ক’রে মিষ্টি জিনিস খাবার। আমি সেবার যখন দেশে যাই, বুড়ী দেখি একটা কঞ্চির লাঠি হাতে মুখুয্যে পাড়ার মোড়ে বেলতলায় বসে। আমার দেখে বললে, কুঞ্জ এলি নাকি ? —ই, ঠাকুমা। এখানে বসে কেন ? –এই বাদ বোষ্টম থাবার বেচতে যাবে, তাই বসে আছি তার জন্তে । বাতাসা কিনব -डिछि८ग्न थाहे । —তা বেশ, বসো ! ভালো আছে তো ? —আমাদের আবার ভালো থাক-থাকি, তুমিও যেমন দাদা। পেতেই পাইনে। বাদার কাছে চারটে পয়সা ধার হয়েছে, আর সে ধার দিতে চায় না। সিধুর কাছে আর কত