পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৬ বিভূতি-রচনাবলী পুজারী যখন তার স্ত্রীকে দোর খুলতে বললে—আমরা তখন দোরের পাশে, কিন্তু অনেকট দূরে দাড়িয়ে। দোর কে একজনে এসে খুলতেই পুজারী-ঠাকুর বললে, দুটি ভদ্রলোক এসেছেন তোমার বাপের বাড়ী থেকে,—তোমার মায়ের কাছ থেকে, ওঁরা তোমাকে কি বলবেন । ওঁদের সঙ্গে কথা বল। আমি একটু জলটল খাওয়ানোর ব্যবস্থা দেখি। তারপর আমাদের দিকে চেয়ে বললে, আমুন আপনারা,---কথাবার্তা বলুন। আসচি আমি । ঘরের মধ্যে আঠারো উনিশ বছরের মেয়ে আধ-ঘোমটা দ্বিয়ে একপাশে দাড়িয়ে আছে, বললে বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনে—কিন্তু আমন অপরূপ মুনারী মেয়ে আমি তো মশাই আমার জীবনে খুব বেশি যে দেখছি, এমন মনে হয় না। টকটকে গৌর বর্ণ,—মাথায় ঘন কালো চুলের রাশ, প্রতিমার মতো মুখশ্ৰী, কি মুন্দর হাত পায়ের গড়ন,—কি সুন্দর ছোট কপালখানি । আর চোখ—সকলের চেয়ে দেখবার জিনিস তার চোখ, ডাগর ডাগর, ভাসা ভাস, তুলি দিয়ে আঁকা টানা জোড়া ভুরু । কতদিন হয়ে গিয়েছে-এখনও সে চেহারা চোখের সামনে দেখছি । ঘরে ঢুকে বললুম—‘মা, আমাদের দেখে ভয় পেও না, লজ্জাও করে না। আমরা পুলিশের লোক। এখানকার থান থেকে আসচি! তোমার মা খানিকটা আগে থানায় আসেন এবং আমাদের অনুরোধ করেন—তাকে সাহায্য করতে । তিনি তোমাকে এথান থেকে নিয়ে যেতে চান। তিনি থানায় বসে আছেন । তুমি যদি যাবার মত কর, তবে র্তাকে এখানে গাড়ী নিয়ে আসতে বলি।’ মেয়েটি একটিবার ঘাড় নেড়ে বললে—আমি বাব না । ঘরের মধ্যে চার ধারে চেয়ে দেথি—এক কোণে একটা ভাঙ্গা টিনের তোরঙ্গ ! তোরঙ্গটার ওপরে একটা কাঠ-বাধানে পুরোনো আয়ন ও একটা কঁীচের তেল মাখবার বাটি ; এক কোণে কতকগুলো ছেড়া-ধুকড়ি লেপ কথা। ঘরের কড়ি থেকে টাঙানো গোটা দুই দড়ির BBS BBB BBBBBS BBBB BBB S BBB BBB B BD BB DS দারিদ্র্যের এমন রূপ আর কোথাও দেখছি বলে মনে হ’ল না । মেয়েটির উত্তর শুনে বললুম—ম, যদি তোমার স্বামীর মতামতের বিষয়ে তোমার সন্দেহ থাকে, আমি বলচি তোমার মা যদি তোমায় নিয়ে যান, তোমার স্বামীর তাতে অমত নেই। আমার কাছে তিনি বলেছেন একথা । আসবার সময় সে-সব কথা হ’য়ে গিয়েছে -কোনো ভয় নেই। নিৰ্ভয়ে তুমি চলে আসতে পার। আর এগানে যে কষ্ট্রে আছে দেখচি, তাতে আমার মনে হয়—তোমার যাওয়াই ভালো । সে এবারও ঘাড় নেড়ে বললে—ন, আপনি মাকে গিয়ে বলুন—তামার যাওয়া হবে না । সে স্বরের দৃঢ়তা এমনি যে, তার ওপর আর বিশেষ কিছু বলা চলে না। তবুও আর একবার বললুম—দেখ মা, বেশ করে ভেবে দেখে, তোমার মা এসেচেন অনেক আশা করে। আমাদের সাহায্য চেয়েচেন বলেই আমরা এসেচি। অবিপ্তি এটাও আমরা দেখবো তুমি