পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ჯ)ჭ\y বিভূতি-রচনাবলী —আমার কথায় তো কিছু হবে না, তুমি বাবাকে কি মাকে বলে। একে তো লেখাপড়া নিয়েই বাবাকে চটিয়ে রেখেচি, আবার বিয়ে নিয়ে চটালে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যেতে হবে । বাবার মেজাজ বোঝ তো ? রাত্রে নিজের ছোট্ট বাসাটিতে হীর কথাটা আবার ভাবলে। আজ পাহাড়ের ওপর উঠেই তার কেমন সব গোলমাল হয়ে গিয়েছিল। কুমীর কথা তাহলে তো সে মোটেই ভোলে নি। নীল আকাশ, নির্জনত, ফুটন্ত বস্ত ক্যামেলিয়া ফুল, বনতুলসীর গন্ধ—সব মুদ্ধ মিলে একটা বেদনার মতো তার মনে এনে দিয়েচে কুমীর হাসিভর ডাগর চোখ জুটির স্মৃতি, তার হাত নাড়ার ললিত ভঙ্গি, তার অনর্গল বকুনি সে তো সন্ন্যাসী হ’য়ে যাবে রামকৃষ্ণ অঙ্গিমে সবাই জানে, মিথ্যেই পিসিমা কুমীর বাবাকে বিয়ের কথা গিয়েছিলেন বলতে । কিন্তু কুমীকে জীবনে সুখী করে দিয়ে যেতে হবে। এ তার একটা কৰ্ত্তব্য । সাহসে ভর করে মণির বাপের কাছে সে প্রস্তাবটা করলে। হীরুকে মণির বাপ-মা স্নেহ করতেন ; তারা বললেন-মেয়ে যদি ভালো হয় তাদের কোনো আপত্তি নেই। র্তারা চাকরি উপলক্ষে পশ্চিমে থাকেন, এ অবস্থায় স্বঘরের মেন্থের সন্ধান পাওয়াও কঠিন বটে। যখন সন্ধান পাওয়া গিয়েচে ভালো মেয়ের—আর মণির বিয়ে যখন দিতেই হবে, তখন মেয়েটিকে দেখে আসতে দোষ কি ? কুমীর জ্যাঠাকে আগেই চিঠি লেখা হয়েছিল, কিন্তু তারা সমস্ত জিনিসটাকে অবিশ্বাস করে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। অত বড় লোকের ছেলেকে জামাই করার মতো দুরাশা তাদের নেই। হীরুর যেমন কাও ! কিন্তু হীরু পূজোর ছুটিতে সত্যিই মণির এক জাঠতুতো দাদাকে মেয়ে দেখাতে নিয়ে এল । কুমী এসে হীরুর পায়ের ধুলো নিয়ে নমস্কার করলে। হীরু বললে—ভালো আছিল কুমী ? —এতদিন কোথায় ছিলে হীরুদা ? —চাকরি করচি যে পশ্চিমে জামালপুরে। সাত-আট মাস পরে তো দেশে ফিরচি। —ও কাকে সঙ্গে করে এনেচ ? হীরু কেশে গলা পরিষ্কার করে বললে—ও আমার এক বন্ধুর দাদা— —তা এখানে এসেচে কেন ? —এসেচে গিয়ে ইয়ে—এমনি বেড়াতে এসেচেই ধরে—তবে—ইয়ে— —তোমার আর টোক গিলতে হবে না । আমি সব জানি, কেন ওসব চেষ্টা করছ शैङ्गल ? হীরু বললে—যাও—অমন করে না ছিং, চুলটুল বেঁধে দিতে বল গিয়ে। ওঁর খুব ভালো লোক, আর বড় লোক । জমালপুরে ওঁদের খাতির কি ! আমি অনেক কষ্টে ওদের এখানে এনেচি। বড় ভালো হবে এ বিয়ে যদি ভগবানের ইচ্ছেন্ন হয়—