পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

wo विङ्कडि-ब्रध्नांक्ली -श्रांभि हैौङ्ग । কুমী অবাক হয়ে দাড়িয়ে রইল। কিছুক্ষণ ভার মুখ দিয়ে কথা বার হ’ল না। তারপর এসে পায়ের ধুলো নিয়ে প্রণাম করে হীরুর মুখের দিকে চেয়ে বললে—কবে এলে হীরুদা ? কোথায় ছিলে এতকাল ? সেই জামালপুরে ? —আজই দুপুরে এসেচি। আর কোন কথা তার মুখ দিয়ে বেরুল না। সে কেবল একদৃষ্টে কুমীর দিকে চেয়ে দাড়িয়ে রইল। কুমীর কপালে সি দুর, হাতে শাখা, পরণে একথানা আধময়লা শাড়ি—যে কুমীকে সে দেখে গিয়েছিল ছ-সাত বছর আগে, এ সে কুমী নয়। সে কৌতুহলোচ্ছল কলহান্তময়ী কিশোরীকে এর মধ্যে চেনা যায় না। এ যেন নিরানন্দের প্রতিমা, মুখস্ত্রী কিন্তু আগের মতোই মুন্দর। এতদিনেও মুখের চেহারা খুব বেশী বদলায় নি। কুমী বললে—এসো আমাদের বাড়ী হীরুদা । কত কথা যে তোমার সঙ্গে আছে, এই ক'বছরের কত কথা জমানে রয়েচে, তোমার বলব বলব করে কতদিন রইলাম, তুমি এ পথে আর এলেই না । হয়েছে! সেই কুমী ! ওর মুখে হাসি সেই পুরোনো দিনের মতই আবার ফুটে উঠেছে ; হীরু ভাবলে, আহা, ওর বকুনির শ্রোতা এতদিন পায়নি তাই ওর মুখখান মান। —তুই আগে চল কুমী। —তুমি আগে চল, হীরুদ । চার-পাঁচ বছরের একটি ছেলে রোয়াকে বসে মুড়ি খাচ্ছিল। কুমীকে দেখে বললে— ওই মা এসেচে ! —বসে হীরুদা, পিড়ি পেতে দিই ! মা বাড়ী নেই, ওপাড়ায় গিয়েচে রায়-বাড়ী, কাল ওদের লক্ষ্মীপুজোর রান্না রোধে দিতে। আমি ছেলেটাকে মুড়ি দিয়ে বসিয়ে রেখে গরু আনতে গিয়েছিলুম দীঘির-পাড় থেকে। উ-কতকাল পরে দেখা হীরুদ ! বসে, বসে। কি খাবে বলে তো ? তুমি মুড়ি আর ছোলাভাজা খেতে ভালোবাসতে। বসে, সনেট দেখিয়ে খোলা চড়িয়ে গরম গরম ভেজে দিই। ঘরে ছোলাও আছে, নারকোলও আছে। দাড়াও, আগে পিদিমট জালি । সেই মাটির ঘর সেই রকমই আছে। সেই কুমী সন্ধ্যা-প্রদীপ দিচ্চে পুরোনো দিনের মতে, যখন সে কত রাত পৰ্য্যস্ত ওদের বাড়ী বসে গল্প করতো। তবুও কত—কত পরিবর্তন হয়ে গিয়েচে ! কত ব্যবধান এখন তার আর কুমীর মধ্যে। কুমী প্রদীপ দেখিয়ে চাল ভাজতে বসল। একটু পরে ওকে খেতে দিয়ে সামনে বসল সেই পুরোনো দিনের মতোই গল্প করতে। সেই হাত-পা নাড়া, সেই বকুনি-সবই সেই । কত কথা বলে গেল। হীরু ওর দিকে চেয়ে থাকে, চোখ আর অন্ত দিকে ফেরাতে পারে না। কুমীও তাই। হীর বললে—ইয়ে, কোথায় বিয়ে হ’ল কুমী ?