পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লেখক রবিবার। মধ্যাহ্নভোজন সমাধা করে একটু ঘুমুবার উদ্যোগ করবো ভাবচি—এমন সময় বাইরে কে ডাকলে—সীতানাথ বাবু বাড়ী আছেন ? কে আবার রবিবার দুপুরে বিরক্ত করতে এল ? ছেলেকে ডেকে বললুম-নিয়ে আয় এখানে, আমি আর উঠতে পারচিনে। একটু পরে ছেলের পিছু পিছু চশমা চোখে ছিপছিপে ফরসা চেহারার একটি ছোকরা ঘরে ঢুকে বিনীত ভাবে প্রণাম করে বললে—আপনারই নাম কি সীতানাথ বাৰু—? বললুম—বমুন, কোথা থেকে আস্চেন ? —আজ্ঞে, এই আপনার কাছেই এলাম। আজ আপনি সকালে—ওই ডাক্তারখানায় বসে ছিলেন, আমি আর দাদা নাইতে যাচ্ছি, দাদা বললেন—আপনি একজন লেখক। তথন তেল মেখেছিলুম, সে অবস্থায় আপনার কাছে যেতে সাহস করিনি। শুনলুম, আপনি শনি-রবিবারে এখানে আসেন, আজই আবার কলকাতা চলে যাবেন ওবেলা। তাই এখন দেখা করতে এলুম। আসার উদ্দেশু শুনে মনটা প্রসন্ন হ’ল না। নিশ্চয়ই লেখ চাইতে এসেচে। এ পাড়াগায়ের টাউনে কোনো কাগজের উৎপাত ছিল না তো জানি—তবে কি এখানেও কাগজ বার হ’ল ? ছোকরা বিনয়ে সঙ্কুচিত হয়ে আস্তে আস্তে চেয়ারে বসল, কিন্তু আমি লক্ষ্য করে দেখলুম, এতক্ষণ সে একবারও আমার মুখ থেকে চোখ ফেরায়নি—চশমার ভেতর দিয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। একটুখানি চুপ করে থেকে ছেলেটি বললে—আপনার কাছে এলাম, যদি মনে কিছু না করেন তাহলে বলি। —বলুন না ? —আমাকে একটু করে লেখা শেখাবেন। আমি এবার বাংলা নিয়ে বি-এ পাস করেচি। এখানকার স্কুলে চাকরি পেয়ে এসেচি। আমার দাদা এখানকার সাবরেজিস্ট্রার। আমার বড় ইচ্ছে আমি লেখক হই। কিছু কিছু লিখেছিলামও, সেগুলো এনেচি সঙ্গে করে— আপনার সময় হবে দেখবার ? আমার সক্ষতি পেয়ে ছোকরা একখানা খাতা ভয়ে ভয়ে আমার হাতে দিয়ে বললেআই-এ পড়বার সময় লিখেছিলুম! চার-পাচটা ছোট গল্প, কতকগুলো কবিতা আর গান व्यांtछ् । ও দেখি আমার মুখের দিকে আগ্রহ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আমি কি মত দিই তাই শোনবার জন্তে। বললুম—মন হয়নি, বেশ লাগল—তবে আপনার গানগুলো—ভালোই হয়েচে । ছোকরা উৎসাহে ও আগ্রহে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে আমার মুখের দিকে চেয়ে