পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अश्व ७ ध्रुङ्क ❖ማo ম্যালেরিয়া । মহেশ ডাক্তারকে আনিবার মতে সঙ্গতি থাকিলে এতদিন তাহাকে আন। হইত ; কাল বৈকালে যে আনা হইয়াছিল সে নিতান্ত প্রাণের দায়ে, খোকা ক্রমশঃ খারাপের দিকে যাইতেছে দেখিয়া থোকার মা কান্নাকাটি করিতে লাগিল, পাড়ার সকলেই মহেশকে আনিবার পরামর্শ দিল, পরিবারের গায়ের একমাত্র সোনার অলঙ্কার মাকড়ি জোড়াটা বাধা দিয়া আটটা টাকা কেশব ঘোডার গাড়ীর ভাডা ও ভিজিটেই ডাক্তারের পাদপদ্মে ঢালিয়াছে। তবুও তো ওষুধের দাম বাকি আছে, নিতান্ত কম্পাউণ্ডারবাবু এখানে ডাকডোক পান, সেই খাতিরেই টাকা-দুই আন্দাজ ওষুধের বিলটা এক হস্তার জন্ত বাকি রাখিতে রাজী दद्देब्रोप्झन । এই তো গেল অবস্থা ! মহেশ ডাক্তার বলিয়া গিয়াছেন, কোন আশা নাই। অমুখ আসলে নিউমোনিয়া, এতদিন যা তা চিকিৎসা হইয়াছে। রাতটা যদি বা কাটে, কাল দুপুরে ‘ক্রাইসিস কাটাইবার সম্ভাবনা কম । কেশব এ কথা জানিত, কিন্তু স্ত্রীকে জানায় নাই। শেষ রাত্রের দিকে যখন খোকার ' হিক আরম্ভ হইল, খোকার মা বলিল—ওগো, খোকার হিঙ্কা উঠেচে, একটু ভাবের জল দ্বিন্ধে ছিক্কাটা সেরে যাবে এখন । জল দেওয়া হইল, হেঁচকী ক্রমশই বৃদ্ধি পাইতে লাগিল, কমিবার নামটিও করে না। অতটুকু কচি বালকের সে কি ভীষণ কষ্ট ! এক একবার হেঁচকী তুলিতে তার ক্ষুদ্র দুৰ্ব্বল বুকখানা যেন ফাটিয়া যাইতেছে। আর তার কষ্ট দেখা যায় না, তখন কেশবের মনে হইতেছিল, “হে ভগবান! তুমি হয় ওর রোগ সারিয়ে দাও, নয় তো ওকে নাও, তোমার চরণে স্বান দাও, কচি ছেলের এ কষ্ট চোখের ওপর আর দেখr"ন্ত পারি নে ৷” স্বৰ্য্য উঠিবার পূৰ্ব্বেই খোকা মারা গেল । কেশবের স্ত্রী কাদির উঠতেই শের বাড়ী হইতে প্রৌঢ় বাড়য্যে-গিরি ছুটির আসিলেন। তার সঙ্গে তার তিন মেয়ে আসিল। সামনের বাড়ীর নববিবাহিত বধূটও আসিল। বন্ধটি বেশ, আজ মাস-দুই বিবাহ হইয়াছে, কিন্তু খোকার অমুখের সময় দুবেলা দেখা শোনা করা, রোগীর কাছে বসিয়া থোকার মাকে স্নানাহারের অবকাশ দেওয়া, নিজের বাড়ী হইতে খাবার করিয়া আনিয়া খোকার মাকে খাওয়ানো—ছেলেমামুষ বৌয়ের কাও দেখিয়া সবাই অবাকৃ। এখন সে আসির। কাদিয়া আকুল হইল। বড় নরম মনটা । দশ মাসের ছেলে মোটে। শ্মশানে লইয়া যাইবার প্রয়োজন নাই। খোকাকে কথা জড়াইয়া কেশব আগে আগে চলিল, তার সঙ্গে পাড়ার আরও তিন-চারজন লোক। ঘন বঁাশবাগান ও বনের মধ্যে স্বড়ি-পথ। এত সকালে এখনও বনের মধ্যে রৌদ্র প্রবেশ করে নাই, হেমস্তের শিশিরসিক্ত লতাপাত, ঝোপঝাপ হইতে একটা আঞ্জ অস্বাস্থ্যকর গন্ধ বাহির হইতেছে। ওপাড়ার সতু বলিল—আর বেশীদূর গিয়ে কি হবে, কি বলে রজনী খুড়ে ? এখানেই—