পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্ম ও মৃত্যু بوازي R বললেন—তোমার বয়েস আর কতটুকু ! তুমি জানবে কি ক’রে । খেয়াঘাটের কাছে শিবমন্দিরটা আছে তো ? খেরাঘাট । রুদ্রপুরে নদীই নেই, মজে গিয়েছে কোনকালে, এখন তার ওপর দিয়ে মানুষ-গরু হেঁটে চলে যায়। তবু পুরোনো নদীর খাতের ধারে একটা বহু প্রাচীন জীর্ণ শিবমন্দির জঙ্গলাবৃত্ত হয়ে পড়ে আছে বটে। শুনেছি সান্ন্যালদেরই কোন পূৰ্ব্বপুরুষ ঐ "শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এসব কথা ইনি কি ক’রে জানলেন ? বিস্ময়ের মুরে বললাম—আপনি আমাদের গায়ের কথা অনেক জানেন দেখছি ? সন্ন্যাসী মৃদু হাসলেন, এমন হাসি শুধু স্নেহময় বৃদ্ধপিতামহের মুখে দেখা যায়, তার অতি তরুণ, অবোধ পৌত্রের কোন ছেলেমাচুষি কথার জন্ত । সত্যি বলছি, সে হাসির স্মৃতি আমি এখনও ভুলতে পারি নি, খুব উচু না হ’লে আমন হাসি মানুষে হাসতে পারে না। তারপর খুব শাস্ত, সস্নেহ কৌতুকের মুরে বললেন—বাড়ী থেকে বেরিয়েছিস্ কেন ? ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম করবি বলে ? আমি কিছু উত্তর দেবার আগেই তিনি আবার বললেন-বাড়ী ফিরে যা, সংসারধৰ্ম্ম করগে যা। এপথ ভোর নয়, আমার কথা শোন । বললাম—এমন নিষ্ঠুর কথা বলবেন না, কিছু হবে না কেন ? আমার সংসারে মন নেই। সংসার ছেড়েই এসেছি। তিনি হেসে বললেন—ওর নাম সংসার ছাড়া নয়। সংসার তুই ছাড়ি নি, ছাড়তে পারবিও নে। তুই ছেলেমানুষ, নিৰ্ব্বোধ। কিছু বোঝবার বয়েস হয় নি। যা বাড়ী যা । মা-বাপের মনে কষ্ট দিস নে । কথা শেষ ক'রে তিনি চ , যাচ্ছেন দেখে আমি বললুম—কিন্তু আমাদের গায়ের কথা কি ক’রে জানলেন বলবেন না ? দয়া ক'রে বলুন— তিনি কোন কথার উত্তর না দিয়ে জোরে জোরে পা ফেলে চলতে লাগলেন—আমিও নাছোড়বান্দা হয়ে তার পিছু নিলাম। খানিক দূর গিয়ে তিনি আমাকে দাড়িয়ে বললেন— কেন আসছিস্ ? —আপনাকে ছাড়ব না। আমি কিছু চাই নে, আপনার সঙ্গ চাই। তিনি সস্নেহে বললেন—আমার সঙ্গে ল তোর কোন লাভ হবে না । তোকে সংসার করতেই হবে । তোর সাধ্য নেই অন্ত পথে যাবার। যা চলে যা—তোকে আশীৰ্ব্বাদ করছি সংসারে তোর উন্নতি হবে । আর সাহস করলুম না তার অনুসরণ করতে, কি-একটা শক্তি আমার ইচ্ছাসত্ত্বেও যেন তার পিছনে পিছনে যেতে আমায় বাধা দিলে। দাড়িয়ে কিছুক্ষণ পরে সামনের দিকে চেয়ে দেখি তিনি নেই। বুঝতে পারলুম না কোন গলির মধ্যে তিনি ঢুকে পড়েছেন বা কোনদিকে গেলেন । প্রসঙ্গক্রমে বলে নিই, অনেক দিন পরে বাড়ী ফিরে এসে দেশের খুব বৃদ্ধ লোকদের কাছে बि. ब्र. é-२¢