পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"లిసి 8 বিভূতি-রচনাবলী আমার মনে হ’ল এই মুখ আমি আগে কোথাও দেখেছি, কিন্তু তখন আমার মাথার গোলমাল হয়ে গিয়েছে, কিছুই ঠিক করতে পারলাম না। বললাম—সন্দেহ নয়, কিন্তু বড় আশ্চৰ্য্য হয়ে গিয়েছি। আমি কিছুই জানি নে কে আপনার .যদি অপরাধ করি মাপ ককন, কিন্তু কথাটার জবাব যদি পাই— বালিকা বললে—মহাভামরীকে চেন না ? আমাকেও চেন না ? তা হলে আর চিনে কাজ নেই। এসেছি কেন জিজ্ঞেস করছ? দিব্যৌথ পথের নাম শোননি তন্ত্রে ? পাষণ্ড'দলনের জন্তে ঐ পথে আমরা পৃথিবীতে নেমে আসি । তোমার যন্ত্রে দিব্যৌথ পথে সাড শ্লেগেছে। তাই ছুটে দেখতে এলাম। কথাটা ভালো বুঝতে পারলাম না। ভয়ে ভয়ে বললাম, তবে আমি কি খুবই পাষণ্ড ? বালিক খিলখিল করে হেসে উঠল। . বললে—তোমার বেলা এসেছি সম্প্রদায় রক্ষার জন্তে-অত ভয় কিসের ! আমি না তোকে লাথি মেরেছি ? শ্মশানের পোডা কাঠ ছুড়ে মেরেছি। তোকে পরীক্ষা না করে ." কি সাধনার নিয়ম বলে দিয়েছি তোকে ? আমি ভয়ানক আশ্চৰ্য্য হয়ে গিয়েছি, বলে কি ? মেয়েটি আবার বললে—কিন্তু মহাডামরীর বড় ভীষণ রূপ, তোর যেমন ভয়, সে তুই . পারবি নে—ও ছেড়ে দে— —আপনি যখন বললেন তাই দিলাম। —ঠিক কথা দিলি ? —দিলাম। এ সময়ে যে-শবদেহের উপর বসে আছি, তাব দিকে আমার নজর পডল। পড়তেই ভয়ে ও বিস্ময়ে আমার সৰ্ব্বশরীর কেমন হয়ে গেল। শবদেহের সঙ্গে সম্মুখের ষোড়শী রূপসীর চেহারার কোন তফাত নেই। একই মুখ, একই রং একই বয়েস । বালিকা ব্যঙ্গের হাসি হেসে বললে—চেয়ে দেখছি কি ? আমি কথার কোন উত্তর দিলাম না। কিছুক্ষণ থেকে একটা সন্দেহ আমার মনে ঘনিয়ে এসেছিল, সেটা মুখেই প্রকাশ ক'রে বললাম—কে আপনি ? আপনি কি সেই শ্মশানের পাগলীও না কি ? একটা বিকট বিদ্রুপের হাসিতে রাত্রির অন্ধকার চিরে ফেড়ে চৌচির হয়ে গেল । সঙ্গে সঙ্গে মাঠময় নরকঙ্কালগুলো হাড়ের হাতে তালি দিতে দিতে একে বেঁকে উদাম মৃত্য শুরু করলে। আর অমনি সেগুলো নাচের বেগে ভেঙে ভেঙে পড়তে লাগল । কোন কঙ্কালের হাত খসে গেল, কোনটার মেরুদণ্ড, কোনটার কপালের হাড, কোনটার বুকের পাজরাগুলো—তবুও তাদের নৃত্য সমানেই চলছে—এদিকে হাড়ের রাশি উচু হয়ে উঠল, আর হাডে হাড়ে লেগে কি বীভৎস ঠক্ ঠক্‌ শব্দ । হঠাৎ আকাশের এক প্রাস্ত যেন জডিয়ে গুটিয়ে গেল কাগজের মতে, আর সেই ছিদ্রপথে