পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 বিভূতি-রচনাবলী অনেক ঘেটু গাছ বনের প্রান্তে, পাহাড়ী ঢালুর সীমানায়। তবে কিনা এখন ফুল নেই গাছে, তবুও আনন্দ হোল গাছগুলো দেখে, এতদূর পাহাড়ী দেশে বাংলাদেশের নিজস্ব বস্তপুষ্পের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ ঘটলো । অত্যন্ত নির্জন স্থানটি, দূরে সৈদবা গ্রাম, কিন্তু বাংলো থেকে গ্রামের ঘরবাড়ী নজরে জাসে না । আমরা কিছু দূরে একটি উপত্যকায় সাবাই ঘাসের চাষ দেখতে গেলুম, একটি পাহাড়ী ঝর্ণ পার হয়ে মোটর গিয়ে দাড়ালো যেখানে, সে স্থানটি চারিদিকে বনে ঘেরা, মাঝখানে খানিকট সমতল ফাকা মাঠ। গাট বাধা কলে হো-কুলির সাবাই স্বাসের মাটি একত্র করে গাট বাধছে । নিকটেই গাছতলায় একজন কেরাণী বসে কুলিদের হিসেব {রাখছে। * কেরাণী সৰ্ব্বত্রই বাঙালী। কাছে গিয়ে বললুম-মশাইকে বঙালী বলে মনে হচ্ছে । —অাজে হ্যা । —আপনি এখানে ক্লার্ক ? কতদিন আছেন? —ত সাত বছর হোল । — এ সাবাই ঘাসের ব্যবসা কাদের ? - —আজ্ঞে দেবীপ্রসাদবাৰুর, সমুয়া স্টেশনের কাছে আপিস আর অর্থাৎ-মাড়োয়ারী। —মাড়োয়ারী তো নিশ্চয়ই। সে আপনি বলবার আগেই বুঝেচি। জায়গা কেমন এটা ? —ভালো । তবে বডড জঙ্গল-মামুষের মুখ দেখার জো নেই। —থাকেন কোথায় ? —সৈদবা গ্রামেই বাবুদের বাসা আছে কৰ্ম্মচারীদের জন্তে, সেখানে রোধে খাই । —ভাল লাগে ? —না। তবে কি করি বলুন, চাকরীর খাতিরে সবই করতে হয়। এই বাজারে চাকরীটুকু গেলে— —সে তো বটেই। বনবিভাগের দু জন বড় কৰ্ম্মচারী আমাদের সঙ্গে। তার সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন পাহাড়ের ওপরে যেখানে সাবাই ঘাসের চাষ চলচে। পাহাড়ের ঢালু জমিতে বড় বড় ট্রেঞ্চ কাটা হয়েছে পাহাড় ঘিরে। তার আশে পাশে গোছা গোছা উলু দ্বাসের মত সবুজ সাবাই স্বাসের গোছা—আমন ধানের গোছার মত । বললুম—ট্রেঞ্চ কিসের ? ছু জন বনবিভাগীয় কৰ্ম্মচারীই অত্যন্ত ব্যস্তভাবে বললেন—জানেন না, ওর নাম কনটুর ট্রেঞ্চ–ওই খালের মত কাটা আছে বলে পাহাড়ের মাটি সরস হয়ে উঠচে । ও জিনিসটা নতুন বেরিয়েচে, আগে ও থিওরিট ছিল না। এখন দেখা যাচ্ছে, কনটুর ট্রেঞ্চের হাওয়া যতদূর স্বায়, ততদূর সরস হয়ে ওঠে মাটি আর বাতাস। এ কথা এদের মুখে আরও অনেকবার শুনেছি। কনটুর ট্রেঞ্চ থিওরির বড় ভক্ত এদের