পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধনে-পাহাড়ে 8&為 লোজী, খাড়া শাল, কেঁদ, বারম প্রভৃতি বনম্পতিশ্রেণীর ঘন সন্নিবেশ দিনের আলোক আটকেচে । সারাদিনের মধ্যে এখানে সুৰ্য্যের আলোক প্রবেশ করে কিনা সন্দেহ, স্বতরাং বনভূমি ঈষৎ আর্দ্র, একটু বেশি শীতল, কাছে কাছে কত স্বদর্শন অৰ্কিড, নিয়ে আগাছার জঙ্গলও বেশ ঘন । এক জায়গায় ছোট-এলাচের গাছ হয়েচে, মিঃ সিংহ দেখালেন খুব বড় হলুদ গাছের মত পাতায় ছোট এলাচের গন্ধ। এদিক-ওদিক থেকে ক্ষীণ জলধারা আমাদের পথের ওপর দিয়ে গড়িয়ে চলেচে, তার ওপর প্রস্তর-সঙ্কুল পথ, সুতরাং আমাদের যেতে হচ্ছিল খুব সস্তপণে । একটা মাঝারি গোছের গাছ দেখে ওঁরা বিজয়ের হাস্তে বলে উঠলেন– এই। এই হলো মাইকেলিয়া চম্পক, চম্পক ফুলের গাছ । আমি বললাম-এ চম্পক গাছ হতে পারে, স্বর্ণচাঁপা নয়। —আমরা অন্ত চাপাগাছ চিনি নে-এ গাছে চম্পক ফুল হয়। —হতে পারে, কিন্তু অন্ত শ্রেণীর চাপা, আপনার ষাকে ভেড লেণ্ডিয়া বলচেন ওই হোল স্বর্ণচাপা। এ গাছের পাতা আমাদের দেশের নোনাগাছের মত দেখতে-এ স্বর্ণচাঁপা গাছ নয় কখনো। তবে এ চম্পক ফুল আমি কখনো দেখি নি, সে অামি স্বীকার করচি। বড় বড় গাছ বেয়ে এক ধরণের লতা উঠেচে। ওঁরা বলেন—বুনো মেটে আলু হয় এর তলায়। এদেশের হো-মেয়েরা বন থেকে এগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। ঘন অরণ্যশীর্ষে প্রভাতের স্থৰ্য্যালোক, কচিৎ কোন বনপুষ্প স্ববাস, এ বড় বনানীর একটা গভীর রহস্তের ভাব আমার মনে এনে দিয়েচে ; ভুলতে পরিচি নে অরণ্য-সমাকুল সিংস্কুমের যে অংশে বিচরণ করচি এটি ব্যাঘ্র ও অন্যান্ত শ্বাপদঅধুষিত এক মহাবন ; ঠিক শৌধীন কোন পার্কে বেড়ানো নয় এটি—যে কোন সময়ে মত্ত হস্তীমুখ বা মহাকায় ব্যাভ্রের সামনে এসে পড়তে পারি, আমরা সম্পূর্ণ নিরস্ত্র—ফরেস্ট গার্ডের স্কন্ধস্থ কুডুল তখন কি কোনো কাজে আসবে ? হরদয়াল সিং বললেন -এখান থেকে টাইগার হিলে যাবেন ? —সে কোথায় ? —মাইল পাচেক দূবে এই বনের নিবিড়তম অংশে। বিহারের গবর্নর একবার কনজারভেটরকে না কি বলেছিলেন-তোমাখের বনের খুব wild জায়গাটি একবার দেখতে চাই। তাই বনবিভাগ থেকে এই স্থানটি নির্বাচিত করা হয়। অবিপ্তি এর মধ্যে লাটসাহেবের মুখ স্থবিধের দিকে কিছু দৃষ্টি রাখা হয়েছিল বই কি ! - কেমন জায়গাটি ? —খানিকট পাহাড়ের উপর উঠতে হবে। একটা পাহাড়ের ওপরে সমতলভূমি টেবিলের মত। সেখান থেকে চারিদিকে চাইলে মনে হবে পৃথিবীতে ঘন বন ছাড়া জার বুঝি কিছু নেই। দৃপ্ত বড় চমৎকার। সত্যিকার বনের সৌন্দৰ্য দেখবেন—