পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8૭૭ বিভূতি-রচনাবলী নিকটবর্তী বন্তগ্রাম থেকে হো-অধিবাসীর সাপের মাংস নিতে এসে দেখে মৃতপ্রায় সাপট সেখান থেকে দৌড় মেরেছে। ওদের জান বড্ড কড়া। সাপটা লম্বায় প্রায় দশ ফুট ছিল। —আপনি কত বড় সাপ দেখেছেন ? —পালামেী-এর জঙ্গলে একবার আঠার ফুট লম্বা একটা পাইথন সাপ এক পাহাড়ী জঙ্গলের ঝর্ণার ধারে গাছের গায়ে জড়িয়ে থাকতে দেখেছিলুম। পাইথন সাপরা সাধারণতঃ ঐ জায়গাতেই থাকে। হরিণ বা খরগোস জল খেতে এলে বপ, করে তাদের উপরে পড়ে জড়িয়ে ফেলে একেবারে হাড়গোড় চূর্ণ করে দেয়, তারপর ধীরে ধীরে গিলতে থাকে। অনেক সময় সম্বর হরিণকেও রেহাই দেয় না। —মানুষ দেখলে কিছু বলে ? —সাবধাল না থাকলে একা মানুষকেও ছাড়ে না । আমি জানি উড়িষ্যার জঙ্গলে একবার একজন কাঠুরে একটা শুকৃনে কাঠের গুড়ি কাটতে গিয়েছিল, গুড়িটার চারপাশে বড় বড় বন ছিল, বাইরের থেকে কিছু দেখা যায় না। কাঠুরেট যেমন সেখানে গিয়েছে অমনি একটা প্রকাও পাইথন ওর একখানা পা জড়িয়ে ধরে ওকে ফেলে দিলে, তারপর লেজের প্রাস্ত দিয়ে গুড়িটা জড়িয়ে ধরে আস্তে আস্তে ওর সৰ্ব্বদেহে কুণ্ডলীর আকারে জড়াতে লাগল। ভাগ্যে ওর সঙ্গে আরও লোক ছিল কিছুদূরে। ওর চীংকারে তারা এসে পড়ে সাপটকে মেরে ফেলে। দু-তিন মাস ভোগবার পরে লোকটা বেঁচে যায়। আমি শুনেছি চল্লিশ ফুট পৰ্য্যস্ত সাপ এ জঙ্গলে দেখা গিয়েছে। ঝর্ণার ধারে গাছের উপরেই এ জাতীয় সাপ সাধারণতঃ বাস করে, কারণ ওখানেই ওদের শিকারের সুবিধা । ক্রমে রাজি গভীর হলো, নানা প্রকার সাপ ও বাঘের গল্প শুনে আমাদের মনে একপ্রকার অস্পষ্ট রহস্যময় ভীতির সঞ্চার হয়েছিল। আমরা সভ্য জগতের অধিবাসী, অন্ধকারময় বনানীর দৃগুও আমাদের নিকট গম্ভীর ও স্বন্দর বটে, কিন্তু এ অনুভূতিও জাগিয়ে দেয় যে এ আমাদের পক্ষে বিদেশ। এখানে বুধনি কুই-এর মত হো মেয়ের স্বচ্ছন্দে ও সানন্দে বিচরণ করতে পারে, বস্ত কার্পাস থেকে মোট কাপড় বুনতে পারে, এর কন্দমূল ফল আহরণ করে ক্ষুন্নিবৃত্তি করতে পারে, এরা করনজা মহুয়া প্রভৃতি বৃক্ষের বীজ সংগ্রহ করে তেল তৈরি করতে পারে, কিন্তু আমরা সঙ্গে করে সভ্য খাদ্য না আনলে এখানে তিন দিনও বাঁচবো না । তাছাড়া এসব বনে পাহাড়ী ঝর্ণার জলে স্নান করা বা ঝর্ণার জল পান করা আদৌ নিরাপদ নয়। ম্যালেরিয়ার ভয় যথেষ্টই আছে। বন-বিভাগের কৰ্ম্মচারীরা বাধা নিয়মে পাচ গ্রেন করে কুইনাইন প্রত্যহ খান, তবুও ম্যালেরিয়ায় ভোগার কথা ওদের কাছেই শুনেছি। অথচ এই সরের মধ্যে ও নরনারীর সুন্দর স্বাস্থ্য, উচ্ছল জীবনানন্দ দেখে হিংসা হয়। জয়-জাড়ির নামও ওরা শোনে নি। কুইনাইন চক্ষেও দেখে নি। বিনা কুনে ও বিনা তরকারিতে মোট চালের ভাত ও জঙ্গলের কন্দমূল খেয়ে অমন স্বাস্থ্য কি করে হয় তা আমাদের বুদ্ধির অগম্য। অরণ্যের রহস্ত, অরণ্যের গোপন অস্তরালেই প্রচ্ছন্ন থাকুক—আমরা গীতের রাতের *यTां श्रांअंग्न कब्रि ।