পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী পড়িয়া রহিল পথের দিকে । আমার সঙ্গীর ইচ্ছা, কাজ শেষ করিয়াই বাহির হইয়া পড়ে— আমি তাহাকে বাধা দিলাম, জ্যোৎস্না-রাত্রে এতটা পথ অশ্বারোহণে যাইবার বিচিত্র সৌন্দর্য্যের পুনরাস্বাদনের লোভে। গেলামও তাই। পরদিন চাদ একটু দেরিতে উঠিলেও ভোর পর্য্যন্ত জ্যোৎস্না পাওয়া BBB S BB B BB BBBS SS BBBBB BBBBBB BBBB BBBS BBBBBBB যেন এক শাস্ত, স্নিগ্ধ, অথচ এক আশ্চৰ্য্যরূপে অপরিচিত স্বল্পজগতের রচনা করিয়াছে—সেই খাটাে খাটাে কাশ-জঙ্গল, সেই পাহাডের সাহুদেশে পীতবর্ণ গোলগোলি ফুল, সেই উচু-নীচু পথ—সব মিলিয়া যেন কোন বহুদূরের নক্ষত্ৰলোক—মৃত্যুর পরে অজানা কোন অদৃশু লোকে অশরীরী হইয়া উড়িয়া চলিয়াছি—ভগবান বুদ্ধের সেই নিৰ্ব্বাণ-লোকে, যেখানে চন্দ্রের উদয় হয় না, অথচ অন্ধকারও নাই । অনেক দিন পরে যখন এই মুক্ত জীবন ত্যাগ করিয়া সংসারে প্রবেশ করি, তখন কলিকাতা শহরে ক্ষুদ্র গলির বাসাবাড়ীতে বসিয়া স্ত্রীর সেলাইয়ের কল চালনার শব্দ শুনিতে শুনিতে অবসর দিনের দুপুরে কতবার ওই রাত্রির কথা, এই অপূৰ্ব্ব আনন্দের কথা, এই জ্যোৎস্নামাখা রহস্যময় বনশ্রীর কথা, শেষরাত্রের চাঁদডোবা অন্ধকারে পাহাডের উপর শুভ্রকাগু গোলগোলি গাছের কথা, শুক্নে কাশ-জঙ্গলের সেীদ সোদ তাজ গন্ধের কথা ভাবিয়ছি—কতবার কল্পনায় আবার ঘোড়ায় চড়িয়া জ্যোৎস্নারাত্রে পূর্ণিয়া গিয়াছি। २ চৈত্রমাসের মাঝামাঝি একদিন খবর পাইলাম সীতাপুর গ্রামে রাখালবাৰু নামে একজন বাঙালী ডাক্তার ছিলেন, তিনি কাল রাত্রে হঠাৎ মারা গিয়াছেন । ইহার নাম পূৰ্ব্বে কখনও শুনি নাই। তিনি যে ওখানে ছিলেন, তাহ জানিতাম না। শুনিলাম আজ বিশ-বাইশ বৎসর তিনি সেখানে ছিলেন । ও-অঞ্চলে তাহার পসার ছিল, ঘর-বাড়ীও নাকি করিয়াছিলেন ঐ গ্রামেই । তাহার স্ত্রী-পুত্র সেখানেই থাকে। এই অবাঙালীর দেশে একজন বাঙালী ভদ্রলোক মারা গিয়াছেন হঠাৎ, তাহার স্ত্রী-পুত্রের কি দশা হইতেছে, কে তাহাদের দেখাশুনা করিতেছে, তাহার সৎকার বা শ্রদ্ধশাস্তির কি ব্যবস্থা হইতেছে, এসব জানিবার জন্য মন অত্যন্ত চঞ্চল হইয়া উঠিল। ভাবিলাম আমার প্রথম কৰ্ত্তব্য হইতেছে সেখানে গিয়া সেই শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোজ-খবর লওয়া . খবর লইয়া জানিলাম গ্রামটি এখান হইতে মাইল-কুড়ি দূরে, কড়ারী খাসমহলের সীমানায়। বৈকালের দিকে সেখানে গিয়া পৌছিলাম। লোকজনকে জিজ্ঞাসা করিয়া রাখালবাবুর বাড়ী খুজিয়া বাহির করিলাম। দুখান বড় বড় খোলার ঘর, খান-তিনেক ছোট ছোট ঘর। বাহিরে এদেশের ধরণে একখানা বসিবার ঘর, তার তিন দিকে দেওয়াল