পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

of 45ff S. ঠিক সেই রকম দুটা লাল আলো। স্টেশনের ঘরে ঘরে টেবিলের উপরে চৌপায়া তেলের লণ্ঠন অলিতেছে। এক স্নাশ বাধানো খাতপত্র। অপু দরজার কাছে গিয়া খানিকটা দাড়াইয়া দাঙিাইয়া দেখিল, একটা ছোট খড়মের বউলের মত জিনিল টিপিয়া স্টেশনের বাবু খটু খটু শব্দ করিতেছে। ” 鸭 ইন্টিশান ! ইন্টিশান ! বেশী দেৱী নয়, কাল সকালেই সে রেলের গাড়ী শুধু যে দেখিলে তাহা নয়, চড়িবেও !*** প্ল্যাটফৰ্ম্ম হইতে নড়িতে তাহায় মন সরিতেছিল না। কিন্তু তােহাৱা বাবা জ্ঞাকিতে আসিল । খড়মের বউলের মত জিনিসটাই নাকি টেলিগ্রাফের কল, তাহার বাবা বলিল । অপু ফিরিয়া দেখিল স্টেশনের পুকুর-ধারে রাধিয়া খাইবার যোগাড় হইতেছে। আর একখানি গাড়ী পূৰ্ব হইতেই সেখানে দাড়াইয়াছিল। আরোহীর মধ্যে আঠারো-উনিশ বৎসরের এক বেী ও একটি যুৱক । অপু শুনিল বৌটি হবিবপুরের বিশ্বাসদের বাড়ীয়, ভাইয়ের সঙ্গে বাপেক্স বাড়ী যাইতেছে। তাহার মায়ের সঙ্গে বৌটির খুব ভাব হইয়া গিয়াছে। তাঁহায় মা খিচুড়ীর চাল ভাল ধুইতেছে, বৌটি আলু ছাড়াইতেছে। রান্না একত্র হইবে। সকাল সাধু সাতটায় ট্রেন আসিল । অপু স্থা করিয়া অনেকক্ষণ হইতে গাজী দেখিবার জন্তু প্ল্যাটফর্মের ধারে ঝুকিয়া দাড়াইয়াছিল, তাহার বাবা বলিল, খোকা, অত সুকে দাড়িয়ে থেকে না, সরে এসে এদিকে। একজন খালাসীও লোকজনদের হুঠাইয়া first কতবড় ট্ৰেনখান ! কি ভয়ানক শব্দ । সামনের একেই ইঞ্জিন বলে ? উঃ । কী কাণ্ড! হবিবপুরের বৌটি ঘোমটা খুলিয়া কৌতুহলের সহিত প্রবেশমান ট্রেনখানার দিকে চাহিয়া ছিল । গাড়ীতে হৈ হৈ কারিয়া মোট-ঘাট সব উঠানো হইল। কাঠের বেঞ্চি সব মুখোমুখি করিয়া পাতা । গাড়ীর মেজেট যেন সিমেণ্টের বলিয়া মনে হইল। ঠিক যেন ঘর একখানা ; জানালা দরজা সব হুবহু ৷ এই তাল্পী গাড়ীখানা, যাহা আসিয়া দাড়াইয়াছে, তাহ ষে আবার চলিবে, সে বিশ্বাস অপুত্ব হইতেছিল না। কি জানি হয়তো নাও চলিতে পারে ; হয়তো উহায়া এখনই বলিতে পারে, ওগো তোমরা সব নামিয়া বাও, আমাদের গাড়ী আজ আর চলিবে না ! তায়ের বেড়ায় এদিকে একজন লোক একবোঝা উলুঘাস মাথায় করিয়া ট্ৰেনখানা চলিয়া যাওয়ায় অপেক্ষায় দাড়াইয়াছিল, অপুর মনে হুইল লোকটা কৃপার পাত্ৰ ! আজিকার দিনে যে গাভী চড়িল না। সে বঁাচিয়া থাকিবে কি করিয়া ? হীরু গাভোয়ান ফটকের বাহিয়ে দাড়াইয়া of fix 5ffT ofs গাড়ী চলিল। অদ্ভুত, অপূৰ্ব্ব দুলুনি!! দেখিতে দেখিতে মাঝেরপাড়া স্টেশন, লোকজন, তোমাকেয় গোট, ই-করিয়া-দাড়াইয়া-থাকা হীরু গাড়োয়ান, সকলকে পিছনে ফেলিয়া গাড়ী বাহিরের উলুখড়ের মাঠে আসিয়া পড়িল। গাছপালাগুলা সাটপট কবিয়া দুদিকের জানালার পাশ কাটাইয়া চুটিয়া পালাইতেছে-কী বেগ ! এরই নাম রেলগাড়ী ! উঃ মাঠখানা যেন