পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\Og বিভূতি-রচনাবলী হাজারি সঙ্কুচিত হইয়া বলিল—থাক্ থাক, এসে মা, রাজরাণী হও মা—এসো, কল্যাণ হোক । অতসীকে হরিচরণবাবু বলিলেন—তোমার হাজারি কাকা গান শুনবেন । গ্রামোফোনটা নিয়ে এসে । অতসীর সঙ্গে টেপি খুব ভাব করিয়াছে। টেপির বাবাকে অতসী এই প্রথম দেখিল— বন্ধুর পিতা কি রকম দেখিতে, কৌতুহলের সহিত সে চাহিয়া দেখিতেছিল, বারার কথায় বাড়ীর মধ্যে চলিয়া গেল এবং কিছুক্ষণ পরে চাকরের হাতে দিয়া গ্রামোফোন রেকর্ডের বাক্স বাহিরে পাঠাইয়া দিল । হরিচরণবাবু চাকরকে বলিলেন বাজাবে কে ? তোর দিদিমণি আসচে না ? —দিদিমণি ষে বল্লেন আপনি বাজাবেন— —আমি ভাল চোখে দেখতে পাব না । তাকেই পাঠিয়ে দিগে যা— একটু পরে অতসী, টেপি এবং পাড়ার আরও দু-তিনটি মেয়ে ঘরে ঢুকিল। কলের গান বাজনা শুরু হইল এবং চলিল ঘণ্টা-দুই । আরও একবার চা দিয়া গেল চাকরে, কিন্তু পরিবেশন করিল অতসী। সব মিটিয়া চুকিয়া যাইতে রাত্রি প্রায় সাড়ে ন’টা বাজিয়া গেল। হাজারি ছটফট করিতেছিল, গান শুনিতে সে এখানে আসে নাই । গান বন্ধ হইলে অতসী, টেপি ও মেয়ের দল যখন বাড়ীর মধ্যে চলিয়া গেল, তপন হাজারি সাহলে ভর করিয়া বলিল—আপনার কাছে একটা আজি ছিল বাবু। হরিচরণবাবু বলিলেন—কি বল ? —আমার কিছু টাকা দরকার, যদি আমায় কিছু ধার দিতেন, তাহলে আমার একটা মস্ত বড় আশার কাজ মিটতো । —মেয়ের বিয়ে দেবে ? —আজ্ঞে না বাবু, তা নয়, ব্যবসা করবো । —কি ব্যবস ? –বাৰু আপনি তো জানেন আমি হোটেলে কাজ করি । আপনার কাছে লুকোবো না। আমি নিজে একটা হোটেল খুলতে চাচ্চি এবার । টাকাটা সেজন্তে দরকার। —কত টাকা দরকার ? —অন্ততঃ দুশো টাকা আমায় যদি দয়া করে দেন বাবু, আমার খালধারের কাঠাল বাগান আমি বন্দক রাখচি আপনার কাছে । এক বছরের মধ্যে টাকাটা শোধ করবে। হরিচরণবাৰু ভাবিয়া বলিলেন—বাগান বন্ধক রেখে টাকা আমি দ্বিতাম না, দিতাম তো তোমাকে এমনি দিতাম, কিন্তু অভ টাক। এমন সময় আমার হাতে নগদ নেই। হাজারি এ-কথার পরে আর কোনো কথা বলিতে পারিল না, বিশেষতঃ সে জানিত হরিচরণবাবু উদ্বার মেজাজের মাহুৰ, সত্যবাদী লোক । টাকা হাতে থাকিলে, হাতে টাকা না থাকার কথা বলিতেন না। অতসী জাসিয়া বলিল—কাক, আপনি একটু বন্ধন। টেপি খেতে ৰসেচে, মা ছাড়লে