পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه (به ভূষণের অশেষ পরিচয় ও সহানুভূতি ; তাদের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও প্রীতি, তার মমতা ও সহমর্মিতা , তাদের মুস্থ হৃদয়ধর্মে তার স্বম্ব বিশ্বাস । অশান্ত হৃদয়াবেগও সরল মাধুর্বে ও মঙ্গলবোধে সমন্বিত হয়ে উঠে এসব সাধারণকে দেয় সহজত্ৰ, বিবেকবুদ্ধি, সরল মহম্ম-মর্যাদা ; সে রূপ আমরা দেখেও দেখতে শিখি না। অবগু আরও দু-একটি সত্যও অলক্ষণীয় থাকে না। বিভূতিভূষণ প্রেমের দুঞ্জেয় গতি সম্বন্ধে সচেতন, কিন্তু প্রেমের আবিলতার প্রতি আগ্ৰহহীন, জটিলতার সম্বন্ধেও সতর্ক। র্তার নায়কের মধুর রসের উপভোগে কুতুহলী, রমণী-রূপের প্রসাদ ভিখারী,—কিন্তু তাতে একটা মাত্রা পর্যন্তই তার স্বচ্ছন্দ, তদfতরিক্ত আবিলতায়ও ধেমন ভীত, প্রেমের গভীরতাও তেমনি তাদের অগোচর। তা ছাড়া বিপন নামক সাধারণ মামুধটির মধ্যে এমন শকর্ষণীয় কী আছে তা বোঝ। দুঃসাধ্য যদি আমরা মনে না রাখি— বিভূতিভূষণ নিজের কবিমনের শিশুচিত সারল্যের ও রহস্তবোধের একটু অধিকার তাকে দিয়েছেন, এবং মানী ও শাস্তি শরৎচন্দ্রের নারী-চরিত্রের ঐতিহেই গড়, সে হিসাবেই বিশ্বাস্ত চরিত্র, এবং সেই রূপেই আমাদের প্রীতি ও সহমর্মিতার স্বাভাবিক উত্তরাধিকারিণী । কেউ তারা শিশু নয়, বরং হৃদয়ধর্মে নারী, প্রাণ-চঞ্চল মানবকল্প—বাঙালী মেয়ের মত দুঃখ দেওয়া অপেক্ষ দুঃখ পেতেই তার অভ্যস্ত।। ( 8 ) "আদর্শ হিন্দু হোটেল’এর কেন্দ্রবিন্দুতে আছে বাৎসল্য রস—অবশু ঘদি বৈষ্ণব রসতত্ত্বের পরিভাষা অবলম্বন করে বলি "বিপিনের সংসারে'র কেন্দ্রবিন্দুতে আছে এক ধরনের মধুর রস, দুর্লভতর—'কামগন্ধ নাহি তায় ? হাজার ঠাকুর লোকটি বিপিনের তুলনায় সাধারণ বুদ্ধির মানুষ, স্বভাবতই সৎ এবং অপতের প্রতিও বিমুখ হতে জানে না। এমন অসাধারণ মানুষ সংসারে থাকতে পারে—থাকলে এ দেশের সাধারণের মধ্যেই আছে। কিন্তু আশ্চর্য এই–সংসারে নিজের রন্ধনপটুতা ও সততার জোরেই সে দাড়াবার স্থান পায়, জীবনক্ষেত্রেও প্রায় অনায়াপেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে, এবং সেই প্রতিষ্ঠালাভের পরেও তার হৃদয়-মনে কোনো পরিবর্তনই ঘটে না। পদ্মঝি’র এককালের বৈরিতা ধখন কৃতজ্ঞতায় পরিবর্তিত হয়, তখনি বরং হাজারি ঠাকুর তাতে লাভ করে জীবনের কৃতাৰ্থতা। এ যেন এক নাম-হীন প্রচ্ছন্ন গান্ধী-চরিত্র। এ সবই আশ্চর্য, তবে বিশ্বাস্তও। কারণ হাজারি ঠাকুরও বিভূতিভূষণের আদর্শ প্রতিম বা ‘ইমেজ –শিশুর মত সরল ; ម្តា নদীর পারে চোখ মেলে বসে থেকে সে দৈনন্দিন জীবনের শ্রম ও অপমান থেকে মুক্ত হয়ে যায়। হয়তো এ কারণেই আমরা মেনে নিতে পার—কুস্কমের মতো পসারিণী গোয়ালিনী, অতপর মতে শিক্ষিত ভাগ্যবগ, এবং নতুন পাড়ার গোয়াল বউটর মতে অ-শিক্ষিতা বধুটি-কেউ তারা এই পিতৃ-প্রতিম প্রৌঢ়কে স্বেচ্ছায় ও গোপনে আপনাদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে বিশ্বাস না করে পারে না । না হলে তাদের এ আচরণ বিশ্বাস্ত হয়ে উঠত না ।