পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 8 বিভূতি-রচনাবলী —আচ্ছা নিও চার আনা পয়সা—আমি দেব। একটু মুড়ো খেয়ে যদি দাম দিতে হয়— তfও নিও । পদ্ম ঝি একটুখানি নরম হইয়া বলিল—তা হ’লে বেচেছিলে ঠিক ? —ন পদ্ম দিদি । —তবে কি করলে ঠিক করে বল— 顱 —তোমার ত পয়সা পেলেই হ’ল, সে খোজে তোমার কি দরকার ? —দরকার আছে তাই বলছি—কোথায় গেল মুড়োটা ? বলো—নইলে কর্তার সামনে তোমার অপমান করব । বল এখনো— —আমি খেয়েছি । —আবার ? আমার সঙ্গে চালাকি করে তুমি পারবে ঠাকুর ? আমি এবার বুঝতে পেরেছি মূড়ে কোথায় গেল –তোমার সেই— হাজারি জানে পদ্ম কি বলিতে যাইতেছে—সে পদ্ম ঝিয়ের মুখের কথা চাপা দিবার জন্য তাড়াতাড়ি বলিল—পদ্ম দিদি, তোমাদের ত খেয়ে পরে মানুষ হচ্ছি গরীব বামুন। কেন আর ও সামান্য জিনিস নিয়ে বকাঝকা কর ? এ কথায় পদ্ম ঝি নরম না হইয়া বরং আরও উগ্র হইয়; উঠিল। বলিল—নিজে খেলে কিছু বলতাম না ঠাকুর—কিন্তু হোটেলের জিনিস পর দিয়ে খাওয়ান সহি হয় না । এর একটা বিহিত না করে আমি যদি ছাড়ি তবে আমার নামে কুকুর পুষো, এই বলে দিচ্ছি সোজ কথা । হাজারি ভয়ে ও উদ্বেগে কাঠ হইয় গেল—নিজের জন্য নয়, কুকুমের জন্য । পদ্ম বিয়ের অসাধ্য কাজ নাই—সে না জানি কি করিয়া বসিবে— কুসুমের শাশুড়ীর কানে—হয়ত কত রকমের কথা উঠাইবে, তাহার উপরে যদি কুসুমের বাপের বাড়ী অর্থাৎ তাহার স্বগ্রামে সে কথা গিয়া পৌঁছায়—তবে উভয়েরই লজ্জায় মুখ দেখানো ভার হইয়া উঠিবে সেখানে। অথচ কুমুম নিরপরাধিনী । পদ্ম ঝি চলিয়া গেল । হাজারি ভাবিয়া চিস্তিয়া রতনঠাকুরের শরণাপন্ন হইল। তাহার আত্মীয়কে বিনা পয়সায় খাওয়ানর ষড়যন্ত্রের মধ্যে হাজারি ছিল—সুতরাং রতন হাজারির দিকে টানিত। সে বলিল— তুমি কিছু ভেব না হাজারি দা, পদ্ম দিদিকে আমি ঠাণ্ড করে দেব। মুড়ো বাইরে নিয়ে যাবে, তা আমায় একবারখানি জানালে হ’ত নি ? তোমায় কত বুঝিয়ে পারব আমি ? কিছু পরে সন্ধ্যার দিকে বেচু চকৰি আসিলেন। চাকর হুকায় জল ফিরাইয়া তামাক সাজিয়া আনিল। ছকা হাতে লইয়া বেচু চক্কত্তি বলিলেন-ধুনো গঙ্গাজল দে আগে-আর পদ্মকে বাজারের ফাঁদ দিতে বলে দে– কয়লাওয়াল মহাবীর প্রসাদ বসিয়াছিল পাওনার প্রত্যাশায়—তাহাকে বলিলেন—সন্ধোর সময় এখন কি ? ওবেল ত সাড়ে বার আনা নিয়ে গিয়েছ, আবার এবেলা দেওয়া যায় ? কাল এসো। তোমার কি ?