পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه/رعا আসলে "আদর্শ হিন্দু হোটেলে’ বিভূতিভূষণ জয় ঘোষণা করেছেন আদর্শের—হাজারি ঠাকুরের নয়। জয় ঘোষণা করেছেন অজস্র নর-নারীর, কয়েকটি টানে আঁকা চিত্রের মধ্য দিয়ে অজস্র মানব-বৈচিত্র্যের এবং বিভূতিভূষণের সেই অসামান্ত দৃষ্টিশক্তির ও সাধারণ মানুষের প্রতি সীমাশেধ-হীন মমতা। রবীন্দ্রনাথ পথের পাচালী’ ও ‘অপরাজিতে’র আলোচনায় ষে কথাটি বলেছিলেন ‘বিপিনের সংসার’ ও ‘আদর্শ হিন্দু হোটেলের মত রচনার পক্ষে তা আরও সত্য—এসব রচনা দাড়িয়ে আছে তার সত্যের জোরে । বিভূতিভূষণের কবিবৃষ্টি, রহস্তবাদিত, প্রকৃতিপ্রেম প্রভূত বৈশিষ্ট। এসব কাহিনীকে সেই সরল অপুর্বত দান করেনি । এখানে মুখ্য হচ্ছে একদিকে মানব-সত্য,—সাধারণ মাহধের প্রতি ৰিশ্বস্ততা, অন্যদিকে প্রকাশসত্য-চোখ মেলে দেখা ও দেখানোর কুশলতা। এই দিক থেকে এ দুই বই যেন বিভূতিভূষণের অভিষাত্রিকেরই অমৃবৃত্তি। কত মেয়ে কত পুরুষ, সকলেই কত পরিচিত এবং অদ্ভুত, সাধারণ এবং বিশিষ্ট । ( a J নবেল ধেমনই লিখুক বাংলা সাহিত্যিক ছোটগল্প লিখতে জানে, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। এবং রবীন্দ্রনাথ থেকে আরম্ভ করে একেবারে আমাদের জীবিত ঔপন্যাসিকরাও অনেকেই ছোটগল্পে সিদ্ধহস্ত। বিভূতিভূষণের সম্বন্ধেও একথা মিথ্যা নয়, এবং তার ছোটগল্প অনেক সময়ে তার উপন্যাস-গোত্রীয় । গল্পে তিনি প্রধান দু'টি দিকে বিশেধ কৃতী । শিল্পকর্মের দিক থেকে অনেক গল্পের শেষ সীমায় পৌছে দেন গল্পটিকে একটি মেচিড়-ধাতে সমস্ত কথাবস্তু এক নতুন ভাববস্তু৩ে রূপান্তরিত হয়ে ওঠে। এ অট পার্থক হলেও আসলে একটা কৌশল—চমক লাগানো । কলা-কৌশল আরও অনেক ধরনের হতে পারে,—তা না বললেও চলে। তবে যে কৌশলের প্রয়োগ যত অলক্ষিত ত৩হ তা স্বাভাবিক এবং সার্থক। 'বেণীগীর ফুলবাড়ীতে ও-নামের গল্পটি, "কুয়াশার রং এবং ‘প্রাবল্য’ প্রভৃতি গল্পে এ কৌশলের সার্থক প্রয়োগই দেখতে পাহ । কিন্তু "প্রাবল্য’ ছাড়া অন্য গল্প দু'টির বিস্তার নবেলের উপযোগীও, আর চমকট অভাবনীয় নয় । ‘প্রাবল্য’ সেদিক থেকে আরও সথিক । তার আবেদন কথঞ্চিৎ খর্ব হয়েছে বরং শেষ বাক্যদুটিতে, তা বাহুল্য। এ ক্রটি বিভূতিভূষণের নবেলেও আছে—তার অমোঘ প্রকৃতিপ্রীতি ও আবেগপ্রবণতা সময়ে-অসময়ে উৎসাহিত হয়ে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। অমোঘ তার রসাবেদন, তবু বাহুল্যও তা মনে হয়,এক এক সময়ে। আর, বাহুল্যোক্তি বাঙালি লেখকের প্রায় একটা জাতীয় ক্রটি । আসলে বিভূতিভূষণের আসল কৃতিত্ব গল্পে ধ। নবেলেও তা—সেই কবিবৃষ্টিতে, প্রকৃতিগ্রেমে, প্রাণশক্তির রহস্তধ্যালে, বিশেষ এক মানবসত্যের অনুভূতিতে, সাধারণের মধ্যে অসাধারণের উদঘাটনে। 'বেণীগীর ফুলবাড়ী’র গল্পগুলিও এসব সত্যের ক্ষণপ্রকাশে উদ্ভাসিত । সঙ্গে আছে কখনো মানবপ্রকৃতির স্ববিরোধী আচরণে একটু করুণ রঙ্গবোধ-মানুষ এরূপই,