পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দুহোটেল ԵրC) এই সময় টেপির মা ঘাট হইতে গা ধুইয়া বাড়ী ফিরিল। হাসিমুখে বলিল—কখন এলে ? হাজারি—এই তো খানিকক্ষণ । ভাল তো সব ? টাকা পেয়েছিলে ? — হ্যা। ভাল কথা, ওদের বাড়ীর সতীশ বলছিল রাণাঘাট থেকে পাঠানো নয় টাকা । তুমি এর মধ্যে কোথাও গিয়েছিলে নাকি ? —রাণাঘাটের চাকরি করিনে তো। এখন আছি গোপালনগরে । বেশ তাল জায়গায় আছি, বুঝলে ? গন্ধবণিকের বাড়ী, ব্রাহ্মণ বলে ভক্তিছেদ খুব। খাওয়া-দাওয়া ভাল। কাপড়ের মস্ত দোকান, দিব্যি জলখাবার দেয় সকালে বিকেলে । টেপি বলিল—কি জলখাবার দেয় বাবা! —এই ধরে কোন দিন মুড়ি নারকেল, কোন দিন হালুয়া । টে পির মা বলিল—বোসো, জিরোও ; চা নেই, তা হোলে করে দিতাম। টেপি, ষাবি মা, সতীশদের বাড়ী চা আছে–( এই কথা বলিবার সময় টেপির মা ভুরু দুটি উপরের দিকে তুলিয়া এমন একটি ভঙ্গি করিল, যাহা শুধু নিৰ্ব্বেধ মেয়েরা করিয়া থাকে )—দুটো চেয়ে নিয়ে আয় । - টে পি বলিল-দরকার কি মা—আমি নিয়ে যাই না কেন বাবাকে অতসী দিদিদের বাড়ী ? সেখানে চা হবে এখন –জলখাবার হবে এখন— ছু-দু’বার টেপি অতসীদের বাড়ী যাইবার কথা বলিয়াছে স্বতরাং হাজারি মেয়ের মতে মত না দিয়া থাকিতে পারিল না। টেপির ইচ্ছা তাহার নিকট অনেকের হুকুমের অপেক্ষ শক্তিমান । হরিচরণবাবু বৈঠকখানায় বসিয়া ছিলেন-হাজারিকে স্বত্ব করিয়া চেয়ারে বসাইলেন। —এসে এসো হাজারি, কবে এলে ? ও টেপি, যা তো অতসীদিদিকে বলগে আমাদের চা দিয়ে যেতে । আমিও এখনো চা খাই নি— —বাবু, ভাল আছেন ? —ই্যা। তুমি ভাল ছিলে ? তোমার সেই হোটেলের কি হোল ? রাণাঘাটেই আছ তো ? হাজারি সংক্ষেপে রাণাঘাটের চাকুরি যাওয়া হইতে গোপালনগরে পুনরায় চাকুরি পাওয়া পৰ্য্যস্ত বর্ণনা করিল। এক সময় অতসী ও টেপি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া তাহাদের সামনের ছোট গোল টেবিলটাতে । চা ও খাবার রাখিল। খাবার মাত্র এক ডিশ—শুধু হাজারির জন্য, হরিচরণবাবু এখন কিছু क्षीरैन्दन ऋ। । হাজারি বলিল—বাবু, আপনার খাবার ? —ও তুমি খাও, তুমি খাও। আমার এখন খেলে অম্বল হয়, আমি শুৰু চা খাবো। হাজারি ভাবিল—এত বড়লোক, এত ভাল জিনিস ঘরে কিন্তু খাইলে অম্বল হয় বলিয়াখাইবার