পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Երtյ- বিভূতি-রচনাবলী হাজারি বলিল—পনেরো দিন ছিলে ? কেন হঠাৎ এ সময়— তারপরেই ঘনশ্যাম কুমুমের কথাটা বলিল । হাজারির কেবল মনে হইতে লাগিল কুম্বমের সঙ্গে কতদিন দেখা হয় নাই—একবার তাহার সহিত দেখা করিতে গেলে কেমন হয় ? মনটা অস্থির হইয়া উঠিয়াছে তাহার অক্সখের খবর শুনিয়া । জীবনে ওই একটি মেয়ের উপর তাহার অসীম স্নেহ ও শ্রদ্ধা । o ইচ্ছা হইল কুস্কমের সম্বন্ধে ঘনশ্যামকে সে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু তাহ করা চলিবে না। সে মনের আকুল আগ্রহ মনেই চাপিয়া শুধু কেবল উদাসীন ভাবে জিজ্ঞাসা করিল —এখন সে অাছে কেমন ? —ত এখন আপনার বাপমায়ের আশীৰ্ব্বাদে সেরে উঠেছে—তবে বড কষ্ট যাচ্ছে সংসারের, দুধ-দই বেচে তো চালাতো, আজ মাসখানেকের ওপর শয্যাগত অবস্থা । ইদিকি আমার সংসারের কাও তো দেখতেই পাচ্চেন—কোথেকে কি করি দাদাঠাকুর— হাজারি এ সম্বন্ধে আর কিছু বলিল না । যেন কুস্কমের সম্বন্ধে তাহার সকল আগ্রহ ফুরাইয়া গেল । বাড়ী ফিরিবার পথে হাজারি ভাবিল রাণাঘাটে তাহাকে যাইতেই হইবে । কুহমের অসুখ শুনিয়া সে চুপ করিয়া থাকিতে পারিবে না। কালই একবার সে রাণাঘাট যাইবে । পথে অতসীর পিতা হরিবাবুর সঙ্গে দেখা। "তিনি মোট লাঠি হাতে করিয়া বেড়াইতে বাহির হইয়াছিলেন । হাজারিকে দেখিয়া বলিলেন—এই যে হাজারি, কোথা থেকে ফিরচো ? তা এসে আমার ওখানে, চলো চা খাবে । বৈঠকখানায় হাঙ্গারিকে বসাইয়া হরিবাবু বলিলেণ—-বসে, আমি বাড়ীর ভেতর থেকে আসছি। তারপর দুজনে একসঙ্গে চা খাওয়া যাবে যতদিন বাড়ী আছ, আসা-যাওয়া একটু করো হে, কেউ আসে না, এ কলাটি সারাদিন বসে বসে আর সময় কাটে না। দাড়াও আস ছ— হরিবাবু বাড়ীর মধ্যে চলিয়া যাইবার কিছুক্ষণ পরে অতসী একখান রেকাবিতে খানকতক লুচি, বেগুনভাজা এবং একটু আখের গুড় লইয়া আসিল । হাজারির সামনের টেবিলে রেকবি রাখিয়া বলিল— আপনি ততক্ষণ খান কাকাবাবু, চা দিয়ে যাচ্ছি— হাজারি বলিল—বাবু আম্বন আগে— —বাবা তো খাবার খাবেন না, তিনি খাবেন শুধু চা। আপনি থাপারটা ততক্ষণ খেয়ে নিন। চা একসঙ্গে দেবো— অতসী চলিয়া গেল না, কাছেই দাড়াইয়া রহিল। হাজারি একটু অস্বস্তি বোধ করিতে লাগিল, বলিবার কিছু খুজিয়া না পাইয়া বলিল—টে পি আজ আসে নি মা ? —না, এ বেলা তো আসে নি । হাজারি আর কিছু কথা না পাইয়া নীরবে থাইতে লাগিল। খাইতে খাইতে একবার