পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দু হোটেল ఈ ఏ ওপর কেমন একটা মায় পড়ে গিয়েছিল, মুখে বলি বটে যাই ঘাই -কিন্তু যেতে মন সরে না। কতকাল ধরে তুমি আর আমি এখানে আছি ভেবে দ্যাখে তো ? এ যেন আপনার ঘর বাড়ী হয়ে গিয়েচে–তাই না ? কিন্তু এরা—বিশেষ করে পদ্মদিদি এখানে টিকতে দিলে না—এবার সত্যিই যাবো। বংশী বলিল—ষতীনকে তুমি ডেকে দিলে না ও আপনি এসেছিল ? —আমি ডেকেছিলাম । ওর অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েচে, আজকাল খেতেই পায় না । তাই ডাকলাম। বলি পুরোনো খদের তো, কত লোক খেয়ে যাচ্চে, ও একটু সিন্নি খেয়ে যাক । এই তো আমার অপরাধ । পরের মাসের শুভ পয়লা তারিখে রেলবাজারে গোপাল ঘোষের তামাকের দোকানের পাশেই নূতন হোটেলটা খুলিল টিনের সাইনবোর্ড লেখা আছে— আদর্শ হিন্দুহোটেল হাজারি ঠাকুর নিজের হাতে রান্না করিয়া থাকেন । ভাত, ডাল, মাছ, মাংস সব রকম প্রস্তুত থাকে । পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও সস্তা । আস্বন ! দেখুন ! পরীক্ষা করুন !!! বেচু চকত্তির হোটেলের অনুকরণে সামনেই গদির ঘর। সেখানে বংশী ঠাকুরের ভাগ্নে সেই ছেলেটি কাঠের বাক্সের উপর খাত ফেলিয়া খরিদারগণের আনাগোনার হিসাব রাখিতেছে। ভিতরে রান্না করিতেছে বংশী ও হাজারি—বেচু চকত্তির হোটেলের মতই তিনটি শ্রেণী করা হইয়াছে, সেই রকম টিকিট কিনিয়া ঢুকিতে হয়। তা নিতান্ত মন্দ নয়। খুলিবার দিন দুপুরের খরিদার হইল ভালই ! বংশী খাইবার ঘরে ভাত দিতে আসিয়া ফিরিয়া গিয়া হাজারিকে বলিল—থাড, কেলাস ত্রিশ খানা। প্রথম দিনের হকে যথেষ্ট হয়েচে । ওবেলা মাংস লাগিয়ে দাও । বহুদিনের বাসনা ঠাকুর রাধাবল্লভ পূর্ণ করিয়াছেন। হাজারি এখন হোটেলের মালিক। বেচু চৰুত্তির সমান দরের লোক সে আজ। অত্যস্ত ইচ্ছা হইল, যত জানাশোনা পরিচিত লোক ষে যেখানে আছে—সকলকেই কথাটা বলিয়া বেড়ায় । মনের আনন্দ চাপিতে না পারিয়া বৈকালে কুস্কমের বাড়ী গিয়া হাজির হইল। কুসুম বলিল—কেমন চললো হোটেল জ্যাঠামশায় ? - —বেশ খদ্ধের পাচ্চি। আমার বড় ইচ্ছে তুমি একবার এসে দেখে যাও—তুমি তো অংশীদার— —ষাবো এখন ! কাল সকালে যাবো। আপনার মনিব কি বল্পে ? —রেগে কাই। ও মাসের মাইনে দেয় নি—লা দিকৃগে, সত্যিই বলছি কুষম মা, আমার