পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sb^ఆ বিভূতি-রচনাবলী না মালীম, একমনে খেয়ে যাই, কত কাজ মাথায়, অতশত কি মনে থাকে ? কিন্তু আপনি ম্বেন ছ হাত কি তিন হাতা— জমিদার-গৃহিণী রান্নাঘরের দোরের কাছে সরিয়া গিয়া ঘরের ভিতর কাহার দিকে চাহিয়া ৰলিয়া উঠিলেন, ঐ শোন, নিজের কানে শোন। ও খেয়ে তো মিথ্যে কথা বলবে না ? কার মুখে কি শুনিস, আর তোর অমনিই মহাভারতের মত বিশ্বাস হয়ে গেল। আর এত লাগানিভাঙানিও এ বাড়ীতে হয়েছে ! এ রকম করলে সংসার করি কি ক’রে ? সেদিন রাত্রে খাইবার সময় বিপিন সবিস্ময়ে দেখিল, ভাতের পরিবর্তে মিষ্টি পোলাও পাতে দেওয়া হইয়াছে। ভোজনের আয়োজনও প্রচুর । এবেল জামাই সঙ্গেই খাইতে বসিয়াছে। বিপিন কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা সঙ্গত মনে করিল না । তাহার ইহাও মনে হইল, জমিদার-গৃহিণী ষে ওবেলা মানীর রাগের কথা তুলিয়াছিলেন, সে কেবল সেখানে জামাই ছিল না বলিয়াই । জামাই প্রতিদিনই আগে থাইয়া দোতলায় চলিয়া যায়। বিপিন একটু ধীরে ধীরে খায় বলিয়া রোজই তাহার দেরি হয় খাইতে । বিপিন খাওয়া শেষ করিয়া বহির্বাটিতে ঘাইবার সময় দেখিল, মানী তাহারই অপেক্ষায় যেন জানালার ধারে দাড়াইয়া আছে। তাহাকে দেখিয়া হাসিমুখে বলিল, কেমন হ’ল, বিপিনদা ? —চমৎকার হয়েছে! সত্যি, সুন্দর পোলাও হয়েছিল ! খুব খাওয়া গেল ! কে রেখেছিল, তুই ? মানী মুখ টিপিয়া হাসিয়া বলিল, বল না, কে ? . -झुद्दे ! —ঠিক ধরেছ। তা হ’লে আজ খুশি তো ? মনে কোনও কষ্ট থাকে তো বল। —খুশি বইকি, সেদিন ষে কাদতে কঁদিতে যাচ্ছিলুম পোলাও না খেতে পেয়ে । তবে কষ্ট একটা আছে । —কি, বল না ? —কাল তুই অত রাগ করলি কেন আমার ওপরে হঠাৎ ? আমার কি দোষ ছিল ? মানী স্থিরদৃষ্টিতে বিপিনের দিকে চাহিয়া বলিল, বলব ? বলতাম না, কিন্তু যখন বলতে বললে, তখন বলি। আমার কাছে কখনও কোনও কথা গোপন করতে না ৰিপিনদা, মনে ভেবে দেখ । বাবার হাত-বাক্স থেকে চাকু-ছুরি পড়ে গিয়েছিল, তুমি কুড়িয়ে পেয়ে কাউকে বল নি, শুধু জামায় বলেছিলে, মনে আছে ? —উঃ, সে কতকালের কথা! তোর মনে আছে এখনও ? মানী সে কথার কোনও উত্তর না দিয়া বলিয়াই চলিল, সেই তুমি জীবনে এই প্রথম আমার কাছে কথা গোপন করলে ! এতে আমায় ষে কত কষ্ট দিলে তা বুঝতে পার ? তুমি দূরে রেখে চলতে পারলে যেন বঁাচ । —ভুল কথা মানী। সেজন্তে নয়, কথাটা তোমার মার বিরুদ্ধে বলা হ’ত নয় কি ?