পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার ۹ سالا ছেলেমান্থৰি ক’রো না, অন্ত ৰথ গোপনে জার এ কথা গোপনে তফাৎ নেই ? মানী হালিমুখে কৰিম বিভ্রুপের স্বরে বলিল, ৰেশ গো ধৰ্ম্মপুত্তর যুধিষ্টির, ৰেণ। এখন ৰা বলি, তাই শোন । এই সময়ে ভেতরের রোয়াকে জমিদার-গৃহিণীর সাড়া পাইয়া বিপিন চট করিয়া জানালার ধার হইতে সরিয়া গেল। B পরদিনই বিপিনকে ধোপাখালির কাছারিতে ফিরিতে হইল। আজকাল বেশ লাগে পলাশপুরে জমিদার-বাড়ী থাকিতে, বিশেষত মানীর সঙ্গে পুনরায় আলাপ জমিবার পর হইতে সত্যই বেশ লাগে । কিন্তু সেখানে বসিয়া থাকিবার জন্ত অনাদি চৌধুরী তাহাকে মাহিনী দিয়া নায়েৰ নিযুক্ত করেন নাই । সমস্ত দিন মহালের কাজে টো টো করিয়া ঘুরিয়া সন্ধ্যাবেল বিপিন কাছারি ফিরিয়া এক বসিয়া থাকে। ভারী নির্জন বোধ হয় এই সময়টা। পৃথিবীতে যেন কেহ কোথাও নাই। কাছারির ভূতাটি রান্নার যোগাড় করিতে বাহির হয়, কাঠ কাটে, কখনও বা দোকানে তেল-জুন কিনিতে ধায় । সুতরাং বিপিনকে থাকিতে হয় একেবারে একা । এই সময় আজকাল মানীর কথা অত্যন্ত মনে হয় । সেদিন পোলাও খাওয়ানোর পর হইতেই বিপিন মানীর কথা ভাবে । এমন একদিন ছিল, যখন মানী ছিল তাহার খেলার সার্থী। সে কিন্তু অনেক দিনের কথা। যৌবনের প্রথমে বদখেয়ালের ঝোকে অন্ধকার রাত্রে পথের ধারে ঘাসের উপর আর্দ্ধচেতন অবস্থায় গুইয়া মানীর মুখ কতবার মনে পড়িত । আর একবার মনে পড়িয়াছিল বিবাহের দিন । উঃ, বড় বেশি মনে পড়িয়ছিল । নববধুর মুখ দেখিয়া বিপিন ভাবিয়াছিল, মানীর মুখের কাছে এর মুখ ! কিলের সঙ্গে কি ! এ কথা সত্য, মানীর ষোল বছরের সে লাবণ্যভর মুখশ্ৰী আর নাই। এবার কয়েকদিন পরে মানীকে দেখিয়া বুঝিল ষে মেয়েদের মুখে পরিবর্তন যত শীঘ্র আসে, বয়স তাহার বিজয়অভিযানের দৃপ্ত রথচক্ররেখা যত শীঘ্ৰ আঁকিয়া রাখিয়া যায় মেয়েদের মুখে, পুরুষদের মুখে তত শীঘ্ৰ পারে না । কিন্তু তাহাতে কিছু আসে যায় না, সেই মানী তো বটে। বিপিন ভালই জানিত, জমিদারের মেয়ে মানীর সঙ্গে তাহার বিবাহ হইতে পারে না, সে জিনিসটা সম্পূর্ণ অসম্ভব ; তবুও মানীর বিবাহের সংবাদে সে ধেন কেমন নিরাশ হইয়া পড়িয়াছিল, আজও তাহা মনে আছে।