পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సినీ తి বিভূতি-রচনাবলী —ওই দিয়ে কি মাহৰ খেতে পারে ? না খেয়ে-থেয়ে তোমার শরীর ঐরকম রোগাকাঠি । একটু ভাল না খেলে-জেলে শরীর সারবে কেমন ক’রে ? তোমার বাবার আমলে দুধ-দ্বিয়ের সোত ব’য়ে গিয়েছে কাছারিতে। এই বড় বড় মাছ । তরিতরকারির ভো কথাই— 藝 বিপিন জানে, কামিনী মাসী বাবার কথা একবার উঠাইবেই কথাবার্তার মাঝখানে । সে কথা না উঠাইয়া বুড়ী ষেন পারে না। সময়ের স্রোত বিনোদ চাটুঙ্গে নায়েবের পর হইতেই বন্ধ হইয়া স্থির হইয়া দাড়াইয়া গিয়াছে, কামিনী মাঙ্গীর পক্ষে তাহা আর এতটুকু অগ্রসর হয় নাই । পৃথিৰী নবীন ছিল, জীবনে আনন্দ ছিল, আকাশ, বাতাসের রং অন্য রকমই ছিল, দুধ ঘি জপধ্যাপ্ত ছিল, কাছারির দাপট ছিল, ধোপাখালিতে সত্যযুগ ছিল—vবিনোদ চাটুজে নায়েবের আমলে । সেসব দিন আর কেহ ফিরাইয়া আনিতে পরিবে না। বিনোদ চাটুজ্জের সঙ্গে সঙ্গে সব শেষ হইয়া গিয়াছে। ভোজনের উপকরণের স্বল্পতার জন্য কামিনী মাসীর অঙ্গুযোগ এক প্রকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তাহা ছাড়া, কামিনী মাসী প্রায়ই দুধর্টুকু, ঘিটুকু, কোন দিন বা এক ছড়া পাকা কলা খাইবার সময় লইয়া হাজির হইবেই। খানিকট আপন মনে পুরানো আমলের কাহিনীর বর্ণনা করিয়া বৃদ্ধ উঠিয়া চলিয়া যায়। পে বর্ণনা প্রায় প্রত্যহ সন্ধ্যায় ৰিপিন শুনিয়া আদিতেছে আজ এক বছর । তবুও আবার শুনিতে হয়, তাহারই পরলোকগত পিতার সম্বন্ধে কথা, না শুনিয়া উপায় কি ? তৃতীয় পরিচ্ছেদ S দিন দশেক পরে বিপিন বাড়ী হইতে স্ত্রীর চিঠি পাইয়া জানিল, তাহার ভাই বলাই রাণাঘাট হাসপাতালে আর থাকিতে চাহিতেছে না। বউদ্বিদিকে অনবরত চিঠি লিখিতেছে, দ্বান্ধীকে বলে বউদিদি, আমায় এখান থেকে বাড়ী নিয়ে যেতে । আমার অস্বথ সেরে গিয়েছে, আর এখানে থাকতে ভাল লাগে না । স্ত্রীর চিঠি পাইয়া বিপিন খুব খুশি হইল না । ইহাতে শুধু কয়েকটি মাত্র সাংসারিক কাজের কথা ছাড়া আর কিছুই নাই। এমন কিছু বেশি দিন তাহাদের বিবাহ হয় নাই যে, দুই একটি তালবাসার কথা চিঠিতে সে স্ত্রীর নিকট হইতে আশা করিতে পারে নং , আজ বলিয়াই বা কেন, মনোরম কবেই বা চিঠিতে মধু ঢালিয়ছিল ? অবশু এ কথা খানিকট। সত্য যে, এতদিন সে বাড়ীতেই ছিল, মনোরমার কোনও প্রয়োজন ঘটে নাই