পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার SS —না না, তা হ’তে দিও না, দিলেই অম্লখ বাড়বে। ভয় দেখাবে যে, তোমার বাজাকে চিঠি লিখব, ওসব ছেলেমাহুৰি চলবে না।—বউদিদিকে দেখছি না ? —দিদি তো এখানে নেই। তাকে উলোর পিসীমা নিয়ে গেছেন আজ দিন পনেরো হ’ল । তিনি এসেছিলেন গঙ্গচ্চান করতে কালীগকে, আমাদের এখানেও এলেন, সঙ্গে ক’রে নিয়ে গেলেন যাবার সময়ে । বিপিন এ সংৰাজে খুব খুশি হইল না। বলিল, নিয়ে গেলেন মানে তো তার সংসারে দাগীবৃত্তি করার জন্তে নিয়ে যাওয়া। ওসব আমি পছন্দ করি না। মনোরমা বলিল, পছন্দ তো কর না, কিন্তু এখানে খায় কি তা তো দেখতে হবে। তুমি চ’লে গেলে পলাশপুরে, আমাদের হাতে তো একটি পয়সা দিয়ে গেলে না। একদিন এমন হ’ল—দুটিখানি পাস্তা-ভাত ছিল, ভান্থ ট্রনিকে দিয়ে আমরা সবাই উপোস করে রইলাম। কাউকে কিছু বলতেও পারি না, জাত ৰায় । পাড়ায় রোজ রোজ কে ধার চাইতে গেলে দেয় বল দিকি ? আমি তো বললুম, উপোস ক’রে মরি সেও ভাল, কারও বাড়ী, কি রায়গিল্পীর কাছে, কি দুলুর মার কাছে, কি লালু চকত্তির মার কাছে চাইতে ধেতে আমি পারব না। কথাগুলি স্বাধ্য এবং মনোরম ষে মিথ্যা বলিতেছে না, বিপিন তাহা বুঝিল । বুঝিলেও কিন্তু এসব কথা বিপিনের আদৌ ভাল লাগিল না। যেমনই বাড়ীতে পা দিয়াছে, অম্বনই সতরে গও অভাব-অভিযোগের কাহিনী সাজাইয়া মনোরমা বসিয়া আছে ৷ এও তো এক ধরণের তিরস্কার । সে কেন খালি হাতে সকলকে রাখিয়া গিয়াছিল, কেন একশো টাকার থলি মনোরমার হাতে দিয়া বাড়ীর বাহির হয় নাই ? স্ত্রীর মুখে তিক্ত তিরস্কার শুনিতে শুনিতেই তাহার জীবন গেল। স্ত্রী কি একটুও বুঝিবে না ? স্বামীর অক্ষমতার প্রতি কি সে এতটুকু অনুকম্প দেখাইতে পারে না ? 8 বৈকালে বিপিন গ্রামের উত্তরে মাঠের দিকে বেড়াইতে গেল। মাঠের ওপারেই একটি ছোট মুসলমান গ্রাম, নাম ৰেলত ৷ সন্ধ্যার এখনও অনেক দেরি আছে দেখিয়া সে ভাৰিল, না হয় এক কাজ করি, আইনঙ্গি চাচার বাড়ী ঘুরে যাই । অত বড় গুণী লোকট, বলাইয়ের অস্থখ সম্বন্ধে একটা পরামর্শ ক’রে দেখি, যদি কিছু করতে পারি। অনেক মস্তরতম্ভর জানে কিনা ৷ আইনদি বাড়ীর সামনে বাঁশতলায় বসিয়া মাছ-ধর ঘূর্ণির বাখারি চাচিতেছিল। চোখে সে ভাল দেখে না, বিপিনের গলার স্বর শুনির চিনিতে পারিয়া বলিল, আন্ধন বাবাঠাকুর, মাঙ্কন । কবে আলেন বাড়ী ? এইখানা নিয়ে বন্ধন ।—বলিয়া একখানা খেজুরপাতার চেটাই