পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার ఫిలిలి মানীর সঙ্গে ভালবাসার যে সম্পর্ক তাহার গড়িয়া উঠিয়াছে, এতদিন অস্তুতঃ বিপিনের মনের দিক হইতে তাহ দেহসম্পর্কহীন ছিল না, মনে মনে মানীর দেহকে সে বাদ দিতে পারে নাই। বিপিনের স্বভাবই তা নয়, স্বক্ষ মানসিক স্তরের আদানপ্রদান তাহার ধাতুগত নয়। মানীর সম্বন্ধে এ আশা বিপিন কখনও ছাড়ে নাই যে, একদিন না একদিন সে মানীকে নামাইবে তাহার নিজস্ব নিম্নস্তরে । সুবিধা স্থযোগ এখন নাই বলিয়া ভবিষ্কাতেও কি ঘটিবে না ? আজ হঠাৎ তাহার মনে হইল, মানীর সহিত তাহার সম্বন্ধ অন্য ধরণের। মানী তাহাকে ধে স্তরে লইয়া গিয়াছে, বিপিনের মন তাহার সহিত পরিচিত ছিল না। অনেক মেয়ের সঙ্গে বিপিন মিশিয়াছে পূৰ্ব্বে অন্তভাবে । মন বলিয়া জিনিসের কারবার ছিল না সেখানে । হয়তে মন জিনিসটাই ছিল না সে ধরণের মেয়েদের । কিন্তু মনোরমা ? বিপিন জানে না । মনোরমার মন সম্বন্ধে বিপিনের কখনও ८कोछूश्ण জাগে নাই । তেমন ভাবে মনোরমা কখনও বিপিনের সঙ্গে মিশে নাই। হয়তো সেটা বিপিনের মোৰ, মনোরমার মনকে বিপিন সে ভাবে চাহিয়াছে কবে ? ষে সোনার কাঠির স্পর্শে মনোরমার মনের ঘুম ভাঙিত, বিপিনের কাছে সে সোনার কাঠি ছিল না। ৰিপিনের মনের ঘুম ভাঙাইয়াছে মানী। সে সোনার কাঠি ছিল মানীর কাছে। দূর মাঠের প্রান্তে চাদ উঠিতেছে। বিপিন একটা খেজুরগাছের তলায় ঘাসের উপর বসিয়া পড়িল । ভারী ভাল লাগিতেছিল, কি যে হইয়াছে তাহার, কেন আজ এত তাল লাগিতেছে—এই আধ-অন্ধকার মাঠ, পূব-আকাশে উদীয়মান চক্স, মাঠের মধ্যে ঝাড় ঝাড় সাদা আকন্দযুল, হুহু হাওয়া—কখনও তেমন ভাবে বিপিন এদিকে আকৃষ্ট হয় নাই, আজ যেন কি হইয়াছে তাহার । বলিতে লজ্জা করিলেও বলিতে হইবে, তাহাঙ্গের গ্রামের জোকানে লে লঙ্ক্যার পর গোপনে তডি পর্য্যস্ত খাইয়া দেখিয়াছে—কি রকম মজা হয় ! এই বছর পাচ আগেও । লবি তখন -আল্পদিন মারা গিয়াছেন । হাতে কাচা পয়সা, বিপিন তখন খুব উড়িতেছে। অবহু কৌতুহলের বশবৰ্ত্তী হইয়াই খাইয়াছিল। খানিকট বাহাদুরিও বটে। তোলা তারের ছেলে হাবুলের সহিত বাজি ফেলা হইয়াছিল। এ সব কথা বিপিনের আজ এমন করিয়া কেন মনে হইতেছে ? লে মানীর বন্ধুত্বের উপযুক্ত নয়। নিজেকে তাল করিয়া পরীক্ষা করিয়া বিপিনের তাহাই মনে হুইল । নিজেকে সে কলঙ্কিত করিয়াছে নানা ভাবে । মানী নিষ্পাপ নিৰ্ম্মল । বিপিন উঠিয়া পথ চলিতে লাগিল । বোধ হয় সে অপেক্ষা করিতেছিল টাঙ্গ ভাল করিয়া উঠিবার জন্ত । একটা নীচু খেজুরগাছে এক ভাড় খেজুর রস দেখিয়া সে ভাড় পাড়িয়া রস খাইল, সন্ধ্যার টাটক রস সাধারণত মেলে না । ভাড়টা আবার গাছে টাঙাইয়া রাখিবার সময় সে ভাড়টার মধ্যে দুইটি পয়সা রাখিয়া দিল। পল্লীগ্রামে এত ধাৰ্ম্মিক কেহ হয় না, কিন্তু আজ বিপিনের