পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার २७9 হইয়া গেল। গ্রামের মধ্যে কাহারও বাড়ীতে যাইতে ভাল লাগে না –সকলে সহাহভূতি দেখাইবে, ‘আহা’ ‘উছ' করিবে –বর্তমান অবস্থায় বিপিনের তাহ অসহ মনে হইতে লাগিল। ভাবিয়, চিস্তিয়া সে আইনন্দির বাড়ীতে গেল, পাশের গ্রামে। আইমন্দির বয়স একশত বছর হইলেও (অন্ততঃ সে বলে ) বসিয়া থাকিবার পাত্র সে নয়। বাড়ীর উঠানে একটা আমড়াগাছের ছায়ায় বসিয়া বুদ্ধ জালের স্বতা পাকাইতেছিল। --বাবাঠাকুর সকালে কি মনে করে ? বোসো--তামাক খাবা ? সাজি দাড়াও । আইনদির সঙ্গেই তামাক খাইবার সরঞ্জাম মজুত। সে চকমকি কিয় সোলা ধরাইয়া হাতে করিয়া সোলার টুকরাটি কয়েকবার দোলাইয়া লইয়া কলিকায় কাঠকয়লার উপর চাপিয়া ধরিল। বিপিন বলিল—চাচা, দেশলাই বুঝি কখনো জালও না ? —ও সব আজকাল উঠেছে বাবাঠাকুর—ও সব তোমাদের মত ছেলেছোকরার কেনে। সোলা চকমকির মত জিনিস আর আছে ? আপনি ভাল হয়ে বোসো। সেকালের ছু একটা গল্প করি শোনো। ওই যে ছাথ চো অশথ গাছ, ওর পাশের জমিটার নাম ছেল ফঁাসিতলার মাঠ। নীলকুঠার আমলে ওখানে লোকের ফাসি হোত। আমার জ্ঞানে আমি ফাসি হতে দেখেছি। তুমি আজ বলচো শিলায়ের কথা—শিলাই ছেল কোথায় তখন ? তুষের আর ঘুটের আগুন মাগীন্দ্রা মালসা পুরে রেখে দিত ঘরে—আর পাকাটির মুখে গন্ধক মাখিয়ে এক অীটি করে রেখে দিত মালসার পাশে। এই ছেল সেকালের শিলাই বাবাঠাকুর—তবে তামাক খাতি সোলা চকমকির রেওয়াজ ছেল । চাদমারির বিলি সোলার জঙ্গল—এক বোঝা তুলে এনে শুকিয়ে রাখে, ভোর বছর তামাক খাও। একটা পয়সা খরচ নেই -- আর এখন ? একটা দিশলাই এক পয়সা, একটা শিলাই দেড় পয়সা—স্থ— কথা শেষ করিয়া অবজ্ঞাপূর্ণ দৃষ্টিতে আইনদি একবার চারিদিকে চাহিয়া লইয়া জোরে জোরে তামাক টানিতে লাগিল । বিপিন বলিল—আচ্ছা চাচা, তুমি তো অনেক মস্তরতস্তর জানো-মানুষ ম’লে তাকে এনে দেখাতে পারো ? আইনদি বিপিনের হাতে কলিকা দিয়া বলিল—ধরো, একটা সোলা ফুটো করে তোমায় হকে বানিয়ে দিই। মস্তরতস্তর অনেক জানি বাবাঠাকুর তোমার বাপ-মায়ের আশীৰ্ব্বাদে । শূন্য ভরে উড়ে যাবে, আগুন খাবো, কাটা মুণ্ডু জোড়া দেবে।— বিপিন এই কথা অন্ততঃ ত্রিশবার শুনিয়াছে বৃদ্ধের মুখে। —কিন্তু মরা মানুষ আনতে পারো চাচা ? —মলে কি মানুষ ফেরে বাবাঠাকুর ? জাসমানে তার হয়ে ফুটে থাকে- নয়তো শেয়াল কুকুর হয়ে জন্মায়। তবে একটা গল্প বলি শোনে— ইহার পর আইনদি একটা খুব বড় জাজগুবি গল্প ফাদিল—কিন্তু বিপিনের সে দিকে মন