পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१२ বিভূতি-রচনাবলী তাহাদের বাড়ীতে অনেক আশা করিয়াই উহার জ্যাঠামশাই বিবাহ দিয়াছিলেন। এখন খাইতে পায় না পেট ভরিয়া দুবেলা। পাড়ায় কোথাও সে বাহির হয় না, সমবয়সী বৌ-বিয়ের সঙ্গে কমই মেশে, কারণ গরীব বলিয়াও বটে এবং বীণার ব্যাপার লইয়াও বটে, নানা অস্ত্রীতিকর কথা শুনিতে হয় বলিয়া সে কোথাও বড় একটা যায় না। প্ৰরের कांछ लदैग्नांई थांटक । বিপিন বলিল, কেঁদে না, বলি শোনো। মনোরম কথা কহিল না, আঁচল দিয়া চোখ মুছিতে লাগিল। আধ-ময়লা শাড়ীর অীচলট মাছর হইতে খানিকট মেঝের উপর লুটাইতেছে। সত্যই কষ্ট হয় দেখিলে। —শোনো, আমি কাল কি পরশু বাড়ী থেকে যাই। পিপলিপাড়া গিয়ে ডাক্তারি করবো ভেবেছি। তুমি কি বলে ? পিপলিপাড়া বেশ গী, চাষীবাসী লোক অনেক। হয়তো কিছু কিছু পাবো। তুমি কি বলে ? স্বামী তাহার মতামত চাহিতেছে, ইহা মনোরমার কাছে এক নূতন জিলি বটে। সে একটু আশ্চৰ্য্য হইল, খুশীও হইল । চোখের জল মুৰিয়া বিপিনের দিকে চাহিয়া বলিল, তুমি ভাক্তারি জানো ? —জানিই তো। ধোপাখালি থাকতে রুগী দেখতাম । —কোথা থেকে শিখলে ডাক্তারি ? —বই পেয়েছিলাম জমিদার-বাড়ীর ইয়ে মানে লাইব্রারি থেকে। বেশ বড় লাইব্রারি আছে কিনা ওদের বাড়ী ; মনোবমার পিতৃগৃহ গোয়াড়ি কৃষ্ণনগর। সে বলিল, লাইব্রারি আবার কি ? লাইব্রেরি তো বলে ! আমাদের পাড়ায় মস্ত লাইব্রেরি অাছে গোয়াড়িতে। জেঠীমা বই আনাতেন, আমরা জুপুরবেলা পড়তাম । —৪ই হোলো, হোলে । তা আমি বলছিলাম কি, দিনকতকের জন্যে একবার ঘুরে এসো না কেন সেখানে ? আমি একটু সামলে নিই। যদি পিপলিপাড়ায় লেগে যায়, তবে পূজোর পরেই নিয়ে আসবো এখন। কি বলে ? মনোরম বলিল, সেখানে যাব কোন মুখ নিয়ে ? নিজের বাবা মা থাকলে অন্য কথা ছিল। জ্যাঠামশায় বিয়ের সময় যা দিয়েছিলেন, তুমি তা ঘুচিয়েছ। শুধু গায়ে শুধু হাতে তাদের সেখানে গিয়ে দাড়াব যে, তারা হল বড়লোক, দুই জ্যাঠতুতো বোন ইস্কুল কলেজে পড়ে, বউদিদিরা বড়লোকের মেয়ে, তারা মুখে কিছু না বললেও মনে মনে হাসে। তার চেয়ে না খেয়ে এখানে পচে মরি সেও ভাল। যুক্তি অকাট্য। ইহার উপর বিপিন কিছু বলিতে পারিল না। বলিল, তা নয় মনোরমা, আমি ডাক্তারিতে বসলেই আজই যে হুড় হুড়, করে টাকা ঘরে আসবে তা তো নয় । ছুদিন একটু জামায় নির্তাবনায় থাকতে না দিলে আমি তোমাদের বেন্ধডাঙায় ফেলে রেখে গিয়ে কি সোয়াস্তি পাব ? তাই বলছিলাম।