পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার ఇవా> মানী আলেয়া বটে—কিন্তু তার আলো তাহার মত পথভ্রান্ত পথিককে পথ দেখাইয়াছে। খুবই কষ্ট হয় মানীর জন্ত, কিন্তু সেই কষ্টের মধ্যেও কি ব্যথাভর অপূৰ্ব্ব আনন্দ আসে তাহার মুখখানি, তাহার সেই সপ্রেম দৃষ্টি মনে করিলে। সৰ্ব্বদা তাহাকে দেখিতে পাইলে এ মনের ভাব থাকিত না, এ কথা এখন সে বোঝে। වේ দত্ত মহাশয় দিবানিদ্রা হইতে উঠিয়া বাহিরে আসিয়া বসিলেন। বলিলেন, শাস্তি বলছিল,— আপনি বাড়ী যাবেন বলে শুধু দুটি চি ড়ে খেয়ে কষ্ট.পাচ্ছেন সারাদিন— —বলেছে বুঝি ? কষ্টটা কি ? না না— বেলা বেশি হোল বলে আর যেতে পারলাম না । আপনার বড় মেয়ে যত্ন করেছে ওবেলা । বড় ভাল মেয়েটি— —যত্ন আর কি করবে ? আপনার ব্রাহ্মণ, আমরা আপনাদের সেবাযত্ন করব সে তো আমাদের ভাগ্যি। সে আর এমন বেশি কথা কি— দত্ত মহাশয় সেকেলে ধরণের গোড়া হিন্দু, ব্রাহ্মণের উপর তাহার অসাধারণ ভক্তি, কাজেই কথাটা তিনি অন্যভাবে লইলেন। কিছুক্ষণ বসিয়া জমিজমাসংক্রান্ত গল্প করিবার পর বলিলেন, এখানে কিছু ধানের জমি করে দিই আপনাকে । জমি সস্তা এখানে। বছরের ভাতের ভাবনা দূর হবে। ডাক্তারির ব্যাপার হচ্ছে, যেখানে পদার সেখানে বাস। দত্ত মহাশয় উঠিয়া চলিয়া গেলেন বাড়ীর মধ্যেই। কিছুক্ষণ পরে দত্ত মহাশয়ের মেয়ে আসিয়া বলিল, বাবা বললেন, আপনি কিছু খেয়ে যান— —কি খাব এখন ? —পরোটা ভেজেচি খানকতক, আপনি আর বাবা খাবেন—ভাত খান নি ওবেলা, খিদে C°i&ION -- বিপিন স্বাস্থ্যবান যুবক, সত্যই তাহার ক্ষুধা পাইয়াছিল। এ সব ধরণের মেয়েমান্থষে মনের কথা জানিতে পারে—মানীকে দিয়া সে দেখিয়াছে। অগত্যা সে বাড়ীর ভিতর উঠিয়া গেল। মেয়েটি ওবেলার মত যত্ন করিয়া খাওয়াইল—কিন্তু খুব বেশি কথা বলিল না, বোধ হয় দত্ত মহাশয় আছেন বলিয়াই । দত্ত মহাশয় বলিলেন, আপনার ওবেলা খাওয়া হয় নি বলে আমি ঘুম থেকে উঠেই দেখি আমার মেয়ে ময়দা মাখতে বসেছে। আমি তো বিকেলে কিছু খাইনে। বললাম, কি হবে রে ময়দা এখন ? তাই বললে, ডাক্তারবাবু ওবেলা ভাত থান নি, ওঁর জন্তে খানকতক পরোট তাজব। আমি তো তাতেই জানলাম । ইতিমধ্যে মাসে করিয়া একবার জল দিতে দত্ত মহাশয়ের মেয়ে কাছে আসিল । তাহার দিকে একবার ভাল করিয়া চাহিয়া দেখিয়া বিপিনের মন শ্রদ্ধায় ও স্নেহে পূর্ণ হইয়া গেল।