পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার 'లిచిపి মানী গাড়ীতে উঠিবার সময় বার বার বলিল-কবে আসচে। পলাশপুরে বিপিনদা ? কালই এসো। —এরা এখানে দুদিন থাকবেন তো? তুমি সেই ফাকে ঘুরে এসে আমাদের ওখান। আলাই চাই ; মনে থাকে যেন । বাড়ী ফিরিবার পথে শাস্তি যেন কেমন একটু বিমনা। সে জিজ্ঞাসা করিল—উনি কে ভাক্তারবাৰু? আপনার সঙ্গে কি করে আলাপ ? বিপিন বলিল—আমি আগে যে জমিদার বাড়ী কাজ করতাম, সেই জমিদারবাবুর মেয়ে। আমার বাবাও ওখানে কাজ করতেন কিনা, ছেলেবেলায় ওদের বাড়ী যেতাম—ওর সঙ্গে একসঙ্গে খেলা করেছি—অনেক দিনের জানাগুনে । শাস্তি বলিল—বেশ লোক কিন্তু। অত বড় মামুষের মেয়ে, মনে কোনো ঠ্যাকার নেই। দেখতেও ভারি চমৎকার । রাত্রে সেদিন বিপিনের ঘুম হইল না। মনের মধ্যে কি এক প্রকারের উত্তেজনা, কি যে আনন্দ, তাহা প্রকাশ করিয়া বলা যায় না-যত ঘুমাইবার চেষ্টা করে—বিছানা যেন গরম আগুন, মানীর সহিত দেখা হইয়াছে—আজ মানীর সহিত দেখা হইয়াছে—মানী তাহাকে পলাশপুর যাইতে বার বার অনুরোধ করিয়াছে—অনেকবার করিয়া বলিয়াছে—সেই মানী । এসব জিনিসও জীবনে সম্ভব হয় ? শুধু মানীর অক্ষরোধেই বা কেন—অনাদিবাবু তাহার বাবার আমলের মনিব । র্তাহার মৃত্যুসংবাদ পাইবা তাহার সেখানে একবার যাওয়াটা লৌকিক এবং সামাজিক উভয় দিক দিয়াই একটা কৰ্ত্তব্য বই কি । & সকালে উঠা সে শাস্তির শ্বশুরকে লইয়া যথারীতি হাসপাতালে গেল। সেখান হইতে ফিরিয়া শাস্তিকে বলিল-শাস্তি, ভাত চড়িয়ে দাও তাড়াতাড়ি, আমি আজই পলাশপুর যাবো। শাস্তি নিজে তাত রাধিয়া বিপিনকে দিত না, তবে হাড়ি চড়াইয়া দিত, বিপিন নামাইয়া গইত মাত্র। তরকারি রাধিবার সময়ে নিজে রান্না করিতে করিতে ছুটিয়া আসিয়া দেখাইয়া ীিত কি ভাবে কি রাধিতে হইবে। শাস্তি মনমরাভাবে বলিল-আজই ? —হ্যা, আজই যাই । বলে গেল কি না কাল-যাওয়া উচিত আজ। বাবার অন্নদাতা ধনিব, বুঝলে না ? — অামাকে নিয়ে চলুন না সেখানে ? বিপিন অবাক হইয়া গেল। শাস্তি বলে কি। সে কোথায় যাইবে ?