পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার \లిల) সন্ধ্যার পর সে অনাদিবাবুদের বাড়ীতে পৌঁছিয়া গেল ! প্রথমেই বীর হাড়ির সঙ্গে দেখ+–সেই বীরু হাড়ি পাইক, যে ইহাদের স্টেটে এক হইয়াও বহু এবং বহু হইয়াও এক। তাহাকে দেখিয়া বীর ছুটিয়া আসিয়া সাষ্টালে প্ৰণাম করিয়া বলিল-নায়েববাৰু যে ! কনে থেকে আলেন এখন ? —ভাল আছিস রে বীরু ? —আপনার ছিচরণ আশীব্বাদে—তা ঝান, মা-ঠাকরোণের সঙ্গে একবার দেখাড়া করে আম্বন। বিপিন বাড়ীর মধ্যে ঢুকিয়া প্রথমে অনাদিবাবুর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিল। তিনি বিপিনকে দেখিয়া চোখের জল ফেলিয়া অনেক পুরানো কথা পাড়িলেন। তাহার বাবা বিনোদবাবুর সময় স্টেটের অবস্থা কি ছিল, আর এখন কি দাড়াইয়াছে, আয় বড়ই কমিয়া গিয়াছে, বর্তমান নায়েবটিও বিশেষ কাজের লোক নয়, তাহার উপর কৰ্ত্ত মারা গেলেন। এখন যে জমিদারী কে দেখাশুনা করিবে তাহ ভাবিয়াই তিনি নাকি কাঠ হইয়া যাইতেছেন। পরিশেষে বলিলেন—তা তুমি এখন কি করছ বাবা ? বিপিন এ প্রশ্নের উত্তর দিল । সে চারিদিকে চাহিতেছিল, সেই অতি স্বপরিচিত ঘরদোর, আগেকার দিনের কত কথা স্বপ্নের মত মনে হয়—আবার সেই বাড়ীতে আসিয়া সে দাড়াইয়াছে –ওই সে জানালাটি-এসব যেন স্বপ্ন—সত্য বলিয়া বিশ্বাস করা এখনও যেন শক্ত । অনাদিবাবুর স্ত্রী বলিলেন—তা বাবা, কর্তা নেই, আমি মেয়েমানুষ, আমার হাত পা আসচে না । তুমি বাড়ীর ছেলে, দেখ শোনে, যাতে যা হয় ব্যবস্থা করো। তোমাকে আর কি বলবো ? —ম, ওপরের চাবিটা একবার দাও তো—সিন্দুক খুলে রূপোর বাটিগুলো – বলিতে বলিতে মানী বারান্দ হইতে বাহিরে আসিয়া রোয়াকে পা দিতেই বিপিনকে দেখিয়া থমকিয়া দাড়াইল। বিম্মিত মুখে বলিল—ওম, বিপিনদী, কখন এলে ? এখন ? কিছু তো জানিনে—তা একবার আমাকে খোজ করে খবর পাঠাতে হয়—এসো, এসো, এসে বসে দালানে । মানীর মা বলিলেন - হ্যা, বসো বাবা । মানী সেদিন বলছিল রাণাঘাট ইষ্টশানে তোমার সঙ্গে হঠাৎ দেখা হয়েছিল, তোমাকে আসতে বলেচে-আমি বল্লম, তা একেবারে সঙ্গে করে নিয়ে এলি নে কেন ? কতদিন দেখিনি— মানী বলিল—বোসো বিপিনদী, আমি একটু চা কৰে আনি—হেঁটে এলে এতটা পথ । কিছুক্ষণ পরে চা ও খাবার লইয়া মানী ফিরিল। বলিল—বিপিনদী, তোমায় এ বাড়ীতে আবার দেখে মনে হচ্চে, তুমি কোথাও যাওনি, আমাদের এখানেই যেন কাজ কর । পুরোনো দিন যেন ফিরে এসেচে– না ? —সত্যি। বোস না এখানে মানী ? তোর দেওর কোথায় ? মানী হাসিন্ধা বলিল—তবুও ভালো, পুরোনো দিনের মত ডাকচে। রাণাঘাট ইটিশানে