পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার HOA কথাবার্তা বলতে এসেছি। কিন্তু তাই কি এসেচি ? এতক্ষণ বসে তোমার সঙ্গে বক্‌ বক্‌ ফরচি কি সেই জন্তে ? পরদিন সকাল হইতে কাজকর্মের খুব ভিড়। জমিদারের বড় মেয়ে বড় মানুষের বউ, খুব জাক করিয়াই চতুর্থীর প্রাদ্ধ হইবে । বিপিন খাটিতে লাগিয়া গেল সকাল হইতেই। আশেপাশের অনেকগুলি গ্রামের ব্রাহ্মণ নিমন্ত্রিত লোকজনের কোলাহলে বাড়ী সরগরম হইয়া উঠিল। মানী একবার বলিল-আহ, শাস্তিকে আনলে হোত বিপিনদা ! নিজে মুখ ফুটে বলেছিলো, আনলে না কেন ? সব তোমার দোষ । —ন। এনেই অত মূখনাড়া শুনলাম, আনলে কি আর রক্ষে ছিল ? —কীৰ্ত্তনের দল আনতে রাণাঘাটে গাড়ী যাচ্চে, তুমি গিয়ে ওই গাড়ীতে তাকে নিয়ে আসবে ? —সে উচিত হয় না, মানী । অন্ধ শ্বশুর দু দিন পড়ে থাকবে কার কাছে ? থাকগে ওসৰ । ধোপাখালির অনেক প্রজা নিমন্ত্রিত হইয়া আসিয়াছিল। তাহাকে দেখিয়া সকলেই খুৰ খুশি। নরহরি দাসও আসিয়াছিল। সে বিপিনকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্ৰণাম করিয়া বলিললায়েববাৰু যে ! অনেক দিনের পর আপনার সঙ্গে স্তাখা। ভাল আছেন ? আপনি চলে যাবার পর ধোপাখালি অমুপায় হয়ে গিয়েচে বাৰু! সবাই আপনার কথা বলে । বিপিন তাহার কুশলপ্রশ্নাদি জিজ্ঞাসা করিল। বলিল-ই্যারে, তোদের গায়ে ডাক্তারি চলে ? আমি আজকাল ডাক্তারি করি কিনা ? নরহরি দাস বলিল—আস্বন, এখ খুনি আহন বাবু। ডাক্তারের যে কি কষ্ট, তা তো নিজের চোখে তুমি দেখেই এসেচ । আপনারে পেলি লোকে আর কোথাও যাবে না। ওষুধ খেয়েই মরবে। - সারাদিন বিপিন বাহিরের কাজকর্মের ভিডে ব্যস্ত রহিল। মানীর সঙ্গে দেখাশুনা হইল ন। অনেক রাত্রে যখন কীৰ্ত্তন বসিয়াছে, তখন মানী আসিয়া বলিল—বিপিনদী, খাবে এসো, রান্নাঘরে জায়গা করেচি । রান্নাঘরের দাওয়ায় মানী নিজের হাতে তাহার পাতে লুচি তরকারি পরিবেশন করিতে করিতে বলিল—আমি জানি তুমি সারাদিন খাওনি, পেট ভরে খাও এখন। বিপিন বিম্মিত হইয়া বলিল—তুই কি করে জানলি ? —আমি সব জানি । —সাধে কি বলি, অন্তৰ্য্যামী মেয়ে ? —নাও, এখন ভাল করে খাও দিকি । বাজে কথা রাখো । দই আর ক্ষীর নিয়ে জালি —তুমি ক্ষীর ভালবাসতে খুব । - আরও ঘন্ট। দুই পরে নিমন্ত্রিতদের আহারের পূৰ্ব্ব মিটিল। বাড়ী অনেক নিস্তন্ধ হইল।