পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O88 विफूडि-ब्रध्नावलौ আপনার ঠিকানা নিলুম জীবন তটচায্যির কাছ থেকে। জীবন ভটচাৰকে মনে পড়ছে না ? লেই যে জীবনদা, আমাদের লাইব্রেরীর সেক্রেটারী ছিল । –কিন্তু জীবনবাবুই বা আমার ঠিকানা জানলেন কি করে—র্তার সঙ্গেও তো বারো তেরে বছর দেখা নেই—যতদিন নাখপুর ছেড়েছি ততদিন তার সঙ্গেও— —জীবনদার শালার এক বন্ধ আপনারও বন্ধু—রাধিকাবাবু, চিনতে পেরেছেন এবার ? সেখানে জীবনদা শুনেছে—আপনি তো আমাদের খবর রাখেন না—আমরা আপনার রাখি । এই, স্থির হয়ে বোস্ খোকা—এক কাপ চা খাওয়ান না দাদা, বডড ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে । সঙ্গের ছোট ছেলেটি অমনি বলিতে শুরু করিল, খিদে পেয়েচে, বাবা—আমার খিদে পেয়েছে । তাহার বাবা ধমক দিয়া বলিল—থাম, ছোড়ার অমনি খিদে খিদে শুরু পেল, খাম না, খেইচি তো ছপুরবেলা— প্রতুল বলিল—আহা, ওকে ধমকাচ্চ কেন, ছেলেমানুষের খিদে তো পেতেই পারে। দাড়াও খোকা, আমি খাবার আনাচ্চি । চা ও জলযোগের পর্ব মিটিয়া গেলে প্রতুল বলিল—তারপর শশধর, এখন হচ্ছে কি ? শশধর বলিল—করবে। আর কি ! রামজীবনপুরের ইউ পি স্কুলের হেড়পণ্ডিত । আজ ছু দিন ছুটি নিয়ে কলকাতায় এলাম, একটু কাজ আছে। তাল কথা প্রতুলদা, এখানে একটু থাকবার জায়গা হবে ? প্রতুল বলিল-ই ই, তার আর কি। থাকো না। জায়গা তো যথেষ্টই রয়েচে । আমি বলে দিচ্ছি তোমাদের খাওয়ার কথা রাত্রে। আজ প্রায় বারো তেরো বছর আগে প্রতুল নাথপুর গ্রামের মিউনিসিপ্যাল অফিসে কেরাণীর চাকুরী লইয়া যায়। নাথপুর নিতাস্ত ক্ষুদ্র গ্রাম নয়, আশপাশের চার-পাঁচখানি ছোট বড় গ্রাম লইয়া মিউনিসিপ্যালিটি—ইলেকৃশন লইয়। দলাদলি মারামারি পর্য্যস্ত হইত, লাইব্রেরী ছিল, ডাক্তারখানা ছিল, হাই স্কুল ছিল, একটা পুলিশের ফঁাড়ি পৰ্য্যস্ত ছিল। একদিন নিজের ক্ষুদ্র বাসাটিতে বসিয়া আছি এক, একটি আঠার উনিশ বছরের ছোকরা আসিয়া প্ৰণাম করিয়া বলিল—আপনি বুঝি নতুন এসেছেন আমাদের গায়ে ? —হঁ্যা । এসে বসো । তোমার নাম কি ? —আমার নাম শশধর । আপনার সাথে আলাপ করতে এলুম—একলাটি বসে থাকেন। —এসে এসো, ভালই। তুমি স্কুলে পড় বুঝি ? শশধর পরিচয় দিল । না, সে স্কুলে পড়ে না । অবস্থা ভাল না, স্কুলে কে পড়াইবে । তাছা ছাড়া সংসারে বাবা নাই, তাহারই ঘাড়ে সংসার। মা, দুই বোন, তিনটি ছোট ছোট ভাই, স্ত্রী। প্রতুল বিক্ষিত হইয়া বলিল, তুমি বিয়ে করেচ নাকি ?