পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృల్సి বিভূতি-রচনাবলী খানিকটা অস্বস্তি ও আড়ষ্ট ভাব বোধ করিতেছিল। পদ্ম যে তাহার মনিব, তাহীদেরই হোটেলে সে একাদিক্রমে সাত ৰৎসর কাজ করিয়াছে, এ কথাটা এত সহজে কি ভোলা যায় ? এমন কি, পদ্মবিকে সে চিরকাল ভয় করিয়া আসিয়াছে, আজও যেন সেই ভাবটা কোথা হইতে আসিয়া জুটিল। পদ্মঝি বলিল—পান সাজবো থাবে ? হাজারি আমতা আমতা করিয়া বলিল—ত!—ত বরং একট!— পান সাজিয়া একটা চায়ের পিরিচে আনিয়া হাজারির সামনে রাখিয়া বলিল—তারপর, রেলের হোটেল তো পেয়ে গেলে শুনলাম । ওখানে বসাবে কাকে ? —ওখানে বসাবে ভাবছি বংশীর ভাগ্নে সেই নরেন—নরেনকে মনে আছে ? সেই তাকে । —মাইনে কত দেবে ? —সে সব কথা এখনও ঠিক হয় নি। ও তো আমার এই হোটেলে খাতপত্র রাখে, দেখাশুনো করে, বড় ভাল ছেলেটি । —ত ভালো। ~চক্কত্তি মশায়ের শরীর ভাল আছে ? ক’দিন ওদিকে আর যেতে পারি নি । হোটেল চলছে কেমন ? —হোটেল চলছে মন্দ নয়। তবে আমি কি বলছিলাম জানো ঠাকুর, কামশায়কে রেলের হোটেলে একটা অংশ দিয়ে রাখো না তুমি ? তোমার কাজের স্ববিধে হবে। হাজারি এ প্রস্তাবের জন্তে প্রস্তুত ছিল না। একটু বিস্ময়ের স্বরে বলিল—কর্তা কি করে থাকবেন ? ওঁর নিজের হোটেল ? —সেজন্যে ভাবনা হবে না। সে আমি দেখব । কি বল তুমি ? —এখন আমি কোন কথা দিতে পারব না পদ্মদিদি। তবে একটা কথা আমার মনে হচ্ছে তা বলি । রেল-কোম্পানী যখন টেণ্ডার নেয়, তখন যার নাম লেখা থাকে, তার ছাড়া আর কোন লোকের অংশটংশ থাকতে দেবে না হোটেলে । হোটেল ত আমার নয়—হোটেল রেল-কোম্পানীর । —ঠাকুর একটা কথা বলব ? তুমি এখন বড় হোটেলওয়াল, অনেক পয়সা রোজগার কর শুনি । কিন্তু আমি তোমায় সেই হাজারি ঠাকুরই দেখি। তুমি এস আমাদের হোটেলে আবার | & হাজারি বিস্ময়ের স্বরে বলিল—চকত্তি মশায়ের হোটেলে ? রণধতে ? সে মনে মনে ভাবিল –পদ্মদিদির মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি ? বলে কি ? পদ্ম কিন্তু বেশ দৃঢ় স্বরেই বলিল—সত্যি বলছি ঠাকুর। এস আমাদের ওখানে আবার । —কেন বল তো পদ্মদিদি ? একথা তুললে কেন ? —তবে বলি শোন। তুমি এলে আমাদের হোটেলট আবার জাকৰে।