পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిuly বিভূতি-রচনাবলী গাড়োয়ান তাড়াতাড়ি বললে— বাৰু শীগগির চলুন, কাছেই পাতিহালের খাল-লেজিকে উনি না যান, টিপকলের আলোটা জালুন— এমন হতভম্ব হয়ে গিয়েছি আমরা, যে, যুবকের পকেটে টর্চ রয়েছে, সে-কৰা ছজনের কারও মনে নেই। 畿 鬱 সবাই ছুটলাম গাড়োয়ানের পিছু পিছু। প্রায় দু-রসি আন্দাজ পথ দুটে যাবার পরে একটা সরু খালের ধারে পৌঁছলাম, তার দু-পাড়ে নিবিড় কষার ঝাড় । তন্ত্র তন্ন করে ঝোপঝাড়ের আড়ালে খুজে, চিৎকার করে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়া পাওয়া গেল না । সব ব্যাপারটা এত অল্প সময়ের মধ্যে ঘটে গেল যে এতক্ষণে ভেবে দেখবারও অবকাশ পাওয়া যায় নি জিনিসটার গুরুত্ব কতটা বা এ থেকে কত কি ঘটতে পারে । পূর্ণিমার দাদা প্রায় কাদ-কাজ স্বরে বললে—আর কোন দিকে কোন জলা আছে— হ্যা গাড়োস্নান ? —ন, বাবু, কাছেপিঠে আর জলা নেই তবে খালের ধারে আপনাদের মধ্যে এক জল দাড়িয়ে থাকুন, আমরা বাকি দু-জন অস্ত দিকে যাই— আমিই খালের ধারে রইলাম, কারণ যুবকটি একলা অন্ধকারে, যতদূর যুৰগাম, দাড়িয়ে থাকতে রাজি নয় । ওরা তো চলে গেল অন্ত দিকে। আমার মুশকিল এই যে সঙ্গে একটা দেশলাই পৰ্যাণ্ড নেই। এই কৃষ্ণাচতুর্দশীর রাত্রের অন্ধকারে একা মাঠের মধ্যে কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে হয় কি জানি ? সেখানে কতক্ষণ ছিলাম জানি না, ঘণ্টাখানেক বোধ হয় হবে, তার বেশীও হয়ত! তারপর খালের ধার ছেড়ে মাঠের দিকে এগিয়ে গেলাম। এদের ব্যাপারটা কি বুঝতে পারছি নে । এমন সময় দূরে আলো দেখা গেল। গরুর গাড়ীর গাড়োয়ানের গলাটা শুনলাম— বাবু, বাবু আমার সাড়া পেয়ে ওরা আমার কাছে এল । গাড়োয়ানের সঙ্গে কয়েকটি গ্রাম্য লোক—ওদের হাতে একটা হারিকেন লণ্ঠন ৷ ব্যস্তভাবে বললাম—কি হ’ল ? পাওয়া গিয়েছে ? যার হাতে লণ্ঠন ছিল, সে-লোকটা বললে—চলেন বাৰু। সব রয়েছেন তেনাস্থা আমার বাড়ীতে বলে। আমি বাৰু গোয়ালম্বরে গরুদের জাব কেটে দিতে, চুকেছি সন্সের একটু পরেই—দেখি গোয়ালঘরের এক পাশে একটি পরমাম্বন্দরী ইঞ্জিলোক। তখন আমি তো চমকে উঠেছি বাৰু! ইকি ! তারপর বাড়ীর লোক এলে পড়ল। তারপর এনারা গিয়ে পড়লেন। তাদের জামরা বাড়ীতে বলিয়ে আপনার খোজে বেঙ্কলাম। অন্ধকারের মধ্যে তদৱলোকের ছেলের একি কষ্ট ! চলুন গরীবের বাড়ী। দুটো ভাল-ভাত রান্না করে খান।