পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

oግ8 বিভূতি-রচনাবলী আনা সের, কেরোসিন তেল ছ-পয়সা বোতল—” এই সব মারাত্মক ধরনের মজার কথা শুনিয়া ও আমাদের গম্ভীর হইয়া বসিয়া থাকিতে হইবে, হাসিয়া ফেলিলেই মার খাইয়। মরিতে হইবে । বর্তমানে নিতাই মাস্টার ক্লাসে ঢুকিয়াই বলিলেন, “ও-খানা কি বই নিয়ে টানাটানি হচ্ছে সব ? তিনটের গাভী কাল এসেছিল প্তি -ট পচিশ মিনিটের সময়, পাচশ মিনিট লেট- অমুক বিস্কুট পয়সায় দশখানা—” আমরা হাসি অতি কষ্টে চাপিয়া মেজের দিকে দুষ্ট নিবদ্ধ করিয়া বসিয়া রহিলাম । নিতাই মাস্টার বইখানা হাতে লইয়া বলিলেন, “কার বই ?” বিষ্ণু সগৰ্ব্বে বলিল, “আমার বই, স্যার । আমার দাদা লিখেছেন, আমাদের একখান। দিয়েছেন- ” নিতাই মাস্টার বইখানা নাড়িয়া-চাড়িয়া দেখিয়া বলিলেন, “হ, থাকৃ, একটু পড়ে দেখব ।” পরের দিন বইখান ফেরৎ দিবার সময় মন্তব্য করিলেন, “লেখে ভাল, বেশ বই। ছোক্ষর এর পর উন্নতি করবে।” বিষ্ণু বাধা দিয়া বলিল, “ছোকরা নন স্যার তিনি, আপনাদের বয়সী হবেন—” নিতাই মাস্টার ধমক দিয়া বলিলেন, “বেশী কথা বইবে না, চুপ করে বসে থাকবে। আবার কথার ওপর কথা ! পুরানো তেঁতুলে অম্বলের ব্যথা সারে, আশ্বিন মাসে দুর্গ পুজে श्ध्न |५ পুরানো তেঁতুলে অম্বলের ব্যথা সারুক আর নাই সারুক, নিতাই মাস্টারের সার্টিফিকেট শুনিয়া বিমুর দাদার বইখান। পড়িবার অত্যন্ত কৌতুহল হইল , বিমুর নিকট যথেষ্ট সাধাসাধনা কবিয়া সেখানা আদায় করিলাম । বাড়ীতে বাবা ও বড়দার চক্ষু এড়াইয়া বইখানাকে শেষ বরিয়া বিমুর এই অদেখা দাদাটির প্রতি মনে মনে ভক্তিতে আপ্লুত হইয়া গেলাম । একটি মেয়েকে কি করিয়া দুষ্ট লোক ধরিয়া লইয়। গেল, নানা কষ্ট দিল, অবশেষে মেয়েটি কিভাবে জলে ডুবিয়া মরিল, তাহারই অতি মৰ্মস্তুদ বিবরণ। পড়িলে চোখে জল রাখা योंग्नि न ! কয়েক মাস কাটিয়া গিয়াছে, একদিন বিহ বলিল, “জানিস পাচু, আমার সেই দাদা, যিনি লেখক, তিনি এসেছেন কাল আমাদের বাড়ী ।” অত্যন্ত উত্তেজিত হইয়া উঠিলাম। "কখন এসেছেন? এখনও আছেন ?” “কাল রাতের ট্রেনে এসেছেন, দু-তিন দিন আছেন।” “সত্যি ? মাইরি বল—” “ম-ইরি, চল বরং, আয় আমাদের বাডী ” আমার ন-দশ বৎসর বয়সে ছাপার বই কিছু কিছু পড়িয়াছি বটে, কিন্তু যাহারা বই লেখে তাহারা কিরূপ জাব কখনো দেখি নাই । একজন জীবস্ত গ্রন্থকারকে স্বচক্ষে দেখিবার লোত