পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী 9איסא শ্রদ্ধা ও সম্ৰমজড়িত কণ্ঠে উত্তর করিলাম, “আঞ্জে হ্যা।” “কি নাম তোমার ?” *ীপাচকড়ি চট্টোপাধ্যায়।’ “বেশ ।” কথা শেষ হুইয়া গেল। দুরু হুরু বক্ষে বাড়ী ফিরিয়া আসিলাম। প্রথম "দিনের পক্ষে এই-ই যথেষ্ট। পরদিন আরও ভাল করিয়া আলাপ হইল। নদীর ধারে বিস্তু, জামি, আরও দু-একটি ছেলে তার সঙ্গে বেড়াইতে বাহির হইয়াছিলাম। ভূষণদাদা বলিলেন, *বল তো বিহু, এ দম্ভোলি বৃত্ৰাস্বর শিরচ্ছিন্ন যাহে’—দম্ভোলি মানে কি ? পারলে না ? কে পারে ?” পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, আমি বয়সের তুলনায় পাকা ছিলাম। তাড়াতাড়ি উত্তর করিলাম, “আমি জানি, বলব.বজ ।” “বেশ বেশ, কি নাম তোমার ?” কালই নাম বলিয়াছি ; এ দীনজনের নাম তিনি মনে রাখিয়াছেন, এ আশা করাও আমার মত অৰ্ব্বাচীন বালকের পক্ষে ধৃষ্টতা। স্বতরাং আবার নাম বলিলাম । “বেশ বাংলা জান তো ! বই-টই পড় না কি ?” এ স্বযোগ ছাড়িলাম না, বলিলাম, "আঙ্কে হ্যা, আপনার বই সব পড়েছি।” বলিতে ভুলিয়া গিয়াছি, ইতিমধ্যে ভূষণদার আরও দুইখানি উপন্যাস ও একখানি কবিতার বই বাহির হইয়াছিল–বিমুদের বাড়ী সেগুলিও অাপিয়াছিল ; বিমুর নিকট হইতে আমি সবগুলিই পড়িয়াছিলাম । ভূষণদাদা বিস্ময়ের স্বরে বলিলেন, “বল কি ? সব বই পড়েছ ? নাম কর তো " “প্রেমের তুফান, রেপুর বিয়ে, কমলকুমারী আর দেওয়ালী।” "বাঃ বাং, এ যে বেশ দেখছি! কি নাম বললে ?” বিনীতভাবে পুনরায় নিজের নাম নিবেদন করিলাম। “বেশ ছেলে ! দ্যাখ তো বিহ, তোর চেয়ে কত বেশী জানে!” গৰ্ব্বে আমার বুক ফুলিয়া উঠিল । একজন লেখক আমার প্রশংসা করিয়াছেন । তারপর ভূষণাঙ্গা ( বিস্তুর স্ববাদে আমিও তাঁহাকে তখন দাদা বলিয়া ডাকিতে আরম্ভ করিয়াছি) নবীন সেন এবং হেমচন্দ্রের কবিতা আবৃত্তি করিয়া শুনাইলেন, সাহিত্য, কবিতা এবং তাহার নিজের রচনা সম্বন্ধে অনেক কথা বলিলেন ; তার কতক বুঝিলাম কতক বুঝিলাম না—এগারে বছরের ছেলের পক্ষে সব বোঝা সম্ভব ছিল না । - বছরের পর বছর কাটিয়া গেল। আমি হাইস্কুলে ভৰ্ত্তি হইলাম। একদিন ভূষণা গম্বন্ধে আমি এক বিষম ধাক্কা পাইলাম আমাদের স্কুলের বাংলা মাস্টারের নিকট হইতে । কি উপলক্ষে মনে নাই, মান্টারমশায় আমাদের ক্লাসের ছেলেদের জিজ্ঞাস করিলেন, “বাংল।