পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী שיש9א সে যখন বাড়ী পৌছিল তখন ৰেল দশটা বাজিয়া গিয়াছিল। চারিদিকে খরয়োঁজ পড়িয়ছিল। তোরবেলা হয়তো একপশলা বৃষ্টি হুইয়াছিল। একটি রাখাল বালক বটের খুরি ধরিয়া নিবিড় আরামে দোল খাইতেছিল। পাশ দিয়া একটি গরুর গাড়ী চাকার শত্ৰ করিতে করিতে চলিয়া গেল। ছটি শালিকপাখী ডাকাডাকি করিয়া মাঠের উপর লুকোচুরি খেলিতে লাগিল । e বাষ্ঠী পৌঁছিয়া দেখিল তাহার মা উনানে আগুন দিতেছেন। ফু দিয়া দিয়া তাহার চক্ষু জালা করিতে লাগিল। অজস্রধারে অশ্র ঝরিতে লাগিল। তিনি অকস্মাৎ গোবিন্দকে দেখিয়া অবাক হইয়া গেলেন, জিজ্ঞাসা করিলেন, কিরে, চলে এলি যে বড় ? গোবিন্দ মার বুকের মধ্যে মাথা গুজিল। তারপর বলিল, তোমায় ছেড়ে আমি আর কখখনো সেখানে যাব না । মা তাহার মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিলেন, তাই হবে বাবা। আমি আর তোমায় হাতছাড়া করছি না । এ কি হয়েছে চেহারার ছিরি । গোবিন্স একটি তৃপ্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করিল। তার মুখ দিয়া আর কোন কথা সরিল | || p প্রাবল্য কথাটি শুনিয়া মন খারাপ হইয়া গেল। পাশের ঘরের বধুটির মেয়ের নাকি ভারী অস্কখ। দিশ দশ ধরিয়া লক্ষ্য করিতেছিলাম, তাহার অনিদ্যম্বন্দর হাস্যমুখর মুখখানি দুর্ভাবনার ছায়াপাতে স্নান হইয়াছে। তাহার অনর্গল কলকণ্ঠ ক্ষস্তি হইয়াছে। সে প্রভাত হইতে রান্ত্ৰি বারোটা পৰ্য্যন্ত আমার স্ত্রীর সহিত কত অসংখ্য গল্প করিত--হাসিয়া হাসিয়া খুন হইত। আজ দীর্ঘ পাঁচ বৎসর যাবৎ তাহদের সহিত তাল রাখিয়া আমাদের নিঃসন্তান সংসার-জীবন বহিয়। যাইতেছিল। যুমার বয়স বেশী নয়, বড় জোর বছর একুশ হবে । কিন্তু এই অল্প বয়সেই সে রীতিমত পাকা গৃহিণী হইয়া উঠিয়াছে। তাহার কথায় এবং কর্মে সৰ্ব্বত্র সেই আভাস পাওয়া যায়। রবিবারে দাড়ি কামাইলে নাকি শরীরের বৃদ্ধি কমিয়া যায়, বৃহস্পতিবারে আমিষ ভক্ষণ করিলে কোন এক দুষ্ট দেবতার কোপে পড়িতে হয় ইত্যাদি অগণিত বিধিনিষেধের বেড়াজালে নিজেকে বদ্ধ করিয়া অতি সস্তপণে সে দিন গুণিয়া যাইতেছিল । তিন প্রাণীর সমবায়ে তাহার ক্ষুদ্র সংসার গড়িয়া উঠিয়াছিল। সে...তাহার কর্মব্যস্ত স্বামী...ও স্বর্গের পরীর মত ছোট একটি ফুটফুটে মেয়ে। এখনও তাহার ঠিকমত কথা ফুটে নাই। বয়স অতি অল্প বলিয়া টলিয়া টলিয়া চলিতে থাকে। কারণে অকারণে রাঙ্গা ঠোটস্থখানি কাপাইয়া হাসিন্ধা