পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(లీ$6 বিভূতি-রচনাবলী বলিতে কি, আমার স্ত্রী কমলিকে তাহার জননীর চেয়ে বেশী ভালবাসিত বলিয়া বোধ হইত। একদিন স্ত্রী কমলিকে কোলে শোয়াইয়া দুধ খাওয়াইতেছিল। তাহার মুখের মধ্যে বিহুক পুরিয়া কহিল, তুই দিন দিন ভারী দুষ্ট হচ্ছিস বাপু বসে দুধ খেতে শিখবি কবে ? আমি কহিলাম, শ্বশুর বাড়ী গিয়ে । স্ত্রী আমার প্রতি একটি বিলোল কটাক্ষ হানিয়া কহিল, তুমি থাম দিকিন । দেখছিম তো কমলি, তোর জন্যে লোকের পাচশে কথা শুনতে হয়। দাও দিকি গামছাট, মুখ হাত পা মুছিয়ে দেব। গামছা দিয়া কহিলাম, অতটা ভাল নয় সরো। সরো অর্থাৎ সরোজিনী, আমার স্ত্রী। কহিল, মানে ? মরীয়া হইয়া বলিলাম, যাই হোক, পর ভিন্ন তো আর কিছু নয় । আমার মুখ দিয়া আর কথা সরিল না, তাহার অবকাশও পাইলাম না। স্ত্রী তীব্রস্বরে প্রতিবাদ করিল, তোমার ঐ এক স্বষ্টিছাড়া কথা । দেখ, ও অলক্ষুণে কথা আমায় কখনও বলো না। আমার কমলি-মাকে তুমি পর ভাবতে পার, কিন্তু আমি পারি না। মরে গেলেও পারব না । কমলি, তুই আমায় পর ভাবিস ? কমলি নেহাং ছেলেমানুষ । সংসারে এই সব তীক্ষু বাক্যের অর্থ জানিত না । সে ফিক্ করিয়া হাসিয়া কহিল, ধোৎ ! স্বতরাং আমার একটিও কথা বলিবার রহিল না। , কমলাকে মধ্যস্থ করিয়া আমাদের দাম্পত্যজীবনে মাঝে মাঝে কলহ হইত। আজ তাহার খেলনা চাই—কাল তাহার পোষাক চাই—তার পরদিন জরির জুতে চাই। এই অসংখ্য অভাব অভিযোগ পুর্ণ করিতে করিতে আমি অস্থির হইয়া উঠিতাম। আমি মানুষ -অমন নিঃস্বার্থভাবে জানিয়া শুনিয়া পরের জন্য এতটা ত্যাগ স্বীকার করিতে রাজী নই। স্ত্রী কহিত, তোমার হাত দিয়ে যদি জল গলে । আমি কহিলাম, যেন জন্মে জন্মে না গলে । স্ত্রী কহিল, ছিঃ ! ছিঃ ! লোকে বলবে কি ? কহিলাম, জান, বেচারা কাক কোকিলের ডিমে তা দেয় ! আসলে আমি কমলিকে আদৌ স্বনজরে দেখিতাম না। এহেন কমলির নাকি অস্থখ—অস্থখ নাকি সহজ নয়, কারণ ডাক্তার পর্য্যন্ত মুখ ঘুরাইয়া গিয়াছে । তাহাকে নাকি আরও আগে দেখানো উচিত ছিল । আমি আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিলাম, বল কি ? আগে তো শুনি নি । বিশুষ্ক মুখে স্ত্রী কহিল, মা আধাগী কি বলেছে সে কথা ? আমি কহিলাম, বড়ই দুঃসংবাদ । স্ত্রী যুক্তহস্ত ললাটে ঠেকাইয়া কহিল, মা মঙ্গলচণ্ডী ! তুমি আমার বাছাকে ভাল করে फ्रां७ म ।