পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

८वनैशैब्र कूणबाएँी ©Y ব্যস্তভাবে বাজারের থলি খুজিতে খুজিতে কহিলাম, বাজার থেকে আজ কি জাসবে বল তো ? স্ত্রী কহিল, আজ আর বাজারে গিয়ে কাজ নেই। তুমি বরং দুটো চিড়ে-মুড়কি খেয়ে জাজ আপিস যাও। কহিলাম, আর তুমি ? স্ত্রী কহিল, আমার কথা আমি ভাবব। অগত্য ফলার খাইয়া সেদিন যথাসময়ে আপিসে হাজির হইলাম। যাহা হউক, সেখানে তো আর স্নেহমমতার বালাই নাই—সেখানে স্ত্রীর স্তায় আবার খাটিবে না। আত্মীয়স্বজনহীন, শূন্ত প্রাণহীন, কৰ্ম্মমুখর আপিস । কমলির অম্লখ আঁকাবাক পথে মোড় ঘুরিতে ঘুরিতে আগাইয়া চলিল। আমার স্ত্রীর মন সংসারে আর বসিল না কিছুতেই—ভাত গলে না কিংবা গলিয়া যায় অত্যন্ত ; তরকারিতে ঝাল বেশী হয় কিংবা ঝালই হয় না; হয়ত মুন বেশী হয় কিংবা আদৌ হয় না। স্ত্রীর তো ঠিকমত খাওয়াই হয় না। প্রাণধারণের জন্য ঐ যা দুবেলা দুটো দাতে কাটা। রাত্রি-দিন সে অক্লাস্তভাবে কমলির সেবা করিতে লাগিল। আমি একদিন কহিলাম, শেষকালে তুমিও কি পড়বে। স্ত্রী উদাস কণ্ঠে কহিল, জানি না । বলিলাম, জানি না নয়। অমনি করে মিছিমিছি নিজের ৰিপদ ভেকে এনে না। স্ত্রী দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিল, কি পাষাণ গো তুমি । স্বতরাং সেইখানেই সে প্রসঙ্গ চাপা পড়িয়া গেল সেদিন রবিবার | বিকালবেলা স্ত্রী কহিল, আমি উকুনে আগুন দিচ্ছি । কোথাও যেও না যেন। সকাল সকাল আজ খেয়ে নাও । প্রশ্ন করিলাম, কেন ? স্ত্রীর গও বাহিয়া মুক্তার স্তায় অশ্রুকণা ঝরিতে লাগিল, ভাঙ্গা ভাঙ্গা স্বরে সে কহিল, কি জা ন, আজ যেন মেয়েটাকে ভাল বুঝছি না। সত্যি আমার হাত পা অবশ হয়ে গেছে। কোন কাজ আর ভাল লাগছে না। সন্ধ্যার পরই খাইতে বসিলাম। অৰ্দ্ধেক খাওয়া হইয়াছে, এমন সময়ে পাশের ঘরে রমা চীৎকার করিয়া উঠিল, ওরে কমলারে, তুই কোথায় গেলিরে ? সেই বিচ্ছেদবেদনাবিধুর ক্রম্বন-শব্দে আকাশ বাতাস রী-র করিয়া উঠিল। স্ত্রী কাদির উঠিল, তাহার হাত হইতে ভাতের থালা পড়িয়া গেল। সে জড়িতকণ্ঠে কহিল, পাতের গোড়ায় একটু জল দাও। আমি স্ত্রীর কথা পালন করিয়া উঠিয়া পড়িলাম। স্ত্রী কহিল, ওকি, খেলে না যে বড় ? বলিলাম, পাষাণ গলে গেছে।